Death Penalty

ফাঁসির আসামিরও মন বা শরীরকে উপেক্ষা করা যায় না! মৃত্যুদণ্ডে অকারণ দেরি নিয়ে বলল সুপ্রিম কোর্ট

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অযৌক্তিক ভাবে দেরি হলে আসামির অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ফাঁসির সাজা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়াতেও ভুল কিছু নেই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৪৭
মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে।

মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অযৌক্তিক কারণে ফাঁসির সাজা কার্যকর হতে দেরি হলে, ওই সাজা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে। আদালত মনে করলে এই সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। সোমবার এক মামলায় এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একটি গণধর্ষণের মামলায় দুই আসামির ফাঁসির সাজা কার্যকর হতে অকারণ দেরি হওয়ায় সাজা বদলে দেয় বম্বে হাই কোর্ট। দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের বদলে ৩৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় বম্বে হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। ওই মামলায় সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, এই ধরনের সিদ্ধান্তে অন্যায্য কিছু নেই।

Advertisement

সোমবার মামলার শুনানির একটি পর্যায়ে অভিযুক্তের অধিকারের বিষয়টিও উঠে আসে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে অকারণ দেরি হলে, তা সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অভিযুক্তের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে বলেও মনে করছে শীর্ষ আদালত। তাই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত কোনও আসামির প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ হলে, সেই তথ্যও আসামিকে জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামির মানসিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করার জন্যও বলেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি এস ওকা, বিচারপতি আহসনউদ্দিন আমানুল্লাহ এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ্‌র বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়নি বলেই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ধোঁয়াশার মধ্যে রাখা যায় না। এটি নিশ্চিত ভাবে ওই আসামিকে মানসিক পীড়া দেয় এবং তাঁর স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।

শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দায়িত্ব যাঁদের উপর, ফাঁসিতে দেরি হওয়ার দায় তাঁদের উপরেই বর্তায়। এর দায় সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষের নয়। ফাঁসির সাজা কার্যকরে অযৌক্তিক দেরি হলে আসামি চাইলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেনও বলেও জানিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এ ক্ষেত্রে পুরনো মামলাটিকে (যে মামলায় ফাঁসির সাজা হয়েছে) নতুন করে বিবেচনার আওতায় আনা হবে না। শুধুমাত্র কী কারণে ফাঁসির সাজা কার্যকরে দেরি হচ্ছে, সেটিই খতিয়ে দেখবে আদালত। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, প্রাণভিক্ষার আর্জি সংক্রান্ত বিষয় দেখার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির একটি পৃথক বিভাগ তৈরি করা উচিত বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত। স্বরাষ্ট্র দফতর কিংবা কারা দফতরের অধীনে ওই বিভাগ ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের প্রাণভিক্ষার আর্জির বিষয়টি দেখভাল করবে। এর ফলে অযৌক্তিক দেরি হওয়া আটকানো যেতে পারে বলে মনে করছে আদালত।

Advertisement
আরও পড়ুন