অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল ছবি।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আবেদনের রায় ঘোষণা সংরক্ষিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ জানিয়েছে, তিহাড় জেলে বন্দি কেজরী জামিন পাবেন কি না আগামী মঙ্গলবার বিষয়টি ‘দেখা হবে’।
শীর্ষ আদালতে জামিনের আর্জির সওয়াল করতে গিয়ে তাঁর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কেজরীওয়াল গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। জামিনে মুক্তি পেলেও বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই।’’ আবগারি দুর্নীতির এফআইআর-এ যে কেজরীর নাম নেই, সে কথাও সুপ্রিম কোর্টকে জানান তিনি। অন্য দিকে, এই মামলায় সিবিআইয়ের আইনজীবী, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু বলেন, ‘‘কেজরীওয়াল জামিন পেলে দিল্লি হাই কোর্টের মনোবল ধাক্কা খাবে।’’
প্রসঙ্গত, এর আগে সিবিআইয়ের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে জামিন চেয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেজরীওয়াল। কিন্তু গত ৫ অগস্ট বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণের বেঞ্চ জানায়, সিবিআইয়ের গ্রেফতারির নেপথ্যে ‘ন্যায্য’ কারণ ছিল। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পদক্ষেপকে কখনওই বেআইনি বলা যাবে না। গত ২৬ জুন ইডি মামলায় আদালতে হাজির করানো হয়েছিল তিহাড় জেলে বন্দি কেজরীকে। তার পর তাঁকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। কিন্তু বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিঙ্ঘভি। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ কার্যত তা মেনে নিয়েই সিবিআই আইনজীবীকে বলেছে, ‘‘যখন জেল হেফাজতে থাকা কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তখন ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন।’’
হাই কোর্ট জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পরই গত ১২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। গত ১৪ অগস্ট শুনানির প্রথম দিন শীর্ষ আদালতে কেজরীওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, তাঁর মক্কেলকে গত ১০ মে আবগারি মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছিল। তার পর জুলাই মাসে এই একই মামলায় তিনি জামিন পান। এমনকি, নিম্ন আদালতও সিবিআইয়ের একটি মামলায় কেজরীওয়ালের জামিন মঞ্জুর করেছে। পাশাপাশি, সিবিআইয়ের গ্রেফতারিকে ‘বেআইনি’ বলেও উল্লেখ করা হয় সুপ্রিম কোর্টে।
বৃহস্পতিবার সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘কেজরীওয়াল গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। জামিনে মুক্তি পেলেও বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই।’’ আবগারি দুর্নীতির এফআইআর-এ যে কেজরীর নাম নেই, সে কথাও সুপ্রিম কোর্টকে জানান তিনি। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, কেন মামলা রুজুর ১০ মাস পরে সিবিআই গ্রেফতার করল কেজরীকে? প্রসঙ্গত, আবগারি মামলায় কেজরীকে গত ২১ মার্চ গ্রেফতার করেছিল ইডি। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি। ফলে তিনিই হয়েছেন দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন। ইডির মামলায় কেজরীকে গত ১২ জুলাই অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মেয়াদ শেষের পরে তিনি জেলে ফেরেন। এর পরে ইডি মামলায় রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে জামিন পেলেও দিল্লি হাই কোর্ট তা খারিজ করেছিল।