তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
প্রশ্নঘুষকাণ্ডে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজের মামলায় লোকসভার সচিবালয়কে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে সচিবালয়কে। এর মধ্যে মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে বক্তব্য জানাতে হবে তাদের। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১১ মার্চ।
বুধবার শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের কথা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেও জানিয়েছেন মহুয়া। ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে লোকসভা থেকে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। লোকসভার এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। সেই মামলাতেই বুধবার লোকসভার সচিবালয়কে নোটিস দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বলা হয়েছে, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সচিবালয়কে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। মহুয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি আদালতে জানান, একটি বিষয়ের জন্য সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে তাঁর মক্কেলের। তাঁর বিরুদ্ধে লগইন সংক্রান্ত তথ্যাবলি বাইরের লোকের সঙ্গে শেয়ার করার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে পাল্টা যুক্তি দেওয়ার অনুমতিই দেওয়া হয়নি মহুয়াকে।
মহুয়ার অভিযোগ, এথিক্স কমিটি একতরফা ভাবে রিপোর্ট তৈরি করেছে। তাঁর বক্তব্য শোনা হয়নি। মহুয়ার আইনজীবী জানান, লোকসভার সাংসদদের প্রত্যেকেরই সেক্রেটারি বা সহযোগী থাকেন। তাঁরা একা সব কাজ করেন না। মানুষের জন্য কাজ করার স্বার্থেই তাই অনেক তথ্য সহযোগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয় সাংসদদের।
Notice issued to Lok Sabha Secreteriat by SC on my plea against wrongful expulsion. Next hearing March 11th.
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) January 3, 2024
Thank you @DrAMSinghvi
মহুয়ার তরফে যুক্তি, যদি ধরে নেওয়া হয় দর্শন হিরানন্দানি মহুয়ার সেক্রেটারি ছিলেন, এবং এখন যদি তিনি সে কথা অস্বীকার করেন, তা হলে সাংসদের কী করার আছে? এই যুক্তি শুনে বিচারপতি খন্না পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি স্বীকার করে নিচ্ছেন যে, ওটিপি অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করা হয়েছিল?’’ এই প্রশ্নের উত্তরে মহুয়ার আইনজীবী আবার জানান, জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের কাজের স্বার্থেই এই কাজ করে থাকেন। কিন্তু এথিক্স কমিটি বিষয়টি পাল্টা যাচাই না করেই রিপোর্ট তৈরি করেছে এবং মহুয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছে সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে।
কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এ প্রসঙ্গে অন্য একটি বিষয়ের উপর জোর দেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন গোটা বিষয়টিতে বিচারবিভাগের হস্তক্ষেপের এক্তিয়ার নিয়ে। তুষার বলেন, ‘‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় যদি বাইরে যায় এবং লোকসভার এথিক্স কমিটি তা খতিয়ে দেখে, বিচারবিভাগ কি তাতে নাক গলাতে পারে?’’ শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে। সব দিক বিবেচনা করে আগামী ১১ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে এবং লোকসভার সচিবালয়কে নোটিস দিয়ে বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। মহুয়ার তরফে লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে এই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছিল। আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে।