আদানির সংস্থায় ‘কারচুপি’র তদন্তে সেবিকে সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
আমেরিকার শেয়ার বাজার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর আওতাধীন সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে সেবি। বুধবার ভারতের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিকে তদন্ত চালানোর জন্য আরও তিন মাস সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেবির তরফে অবশ্য তদন্ত শেষ করার জন্য ছ’মাস সময় চাওয়া হয়েছিল। শীর্ষ আদালত ছ’মাসের সেই আর্জি মানতে চায়নি।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সেবিকে ১৪ অগস্টের মধ্যে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। সেবির আইনজীবী তুষার মেহতাকে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে সেবির অতিরিক্ত সময় পাওয়া উচিত কিনা। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি সেবির আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, “আমরা আপনাদের অনির্দিষ্ট সময় দিতে পারি না। আমাদের জানান তদন্তের অগ্রগতি কতটা হয়েছে।”
২০১৬ সালে শিল্পপতি গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোনও সংস্থায় তদন্ত করা হয়নি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এ কথাই জানিয়েছিল সেবি। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের আগেই সেবি আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির ‘কারচুপি’ নিয়ে তদন্ত করছে— কিছু মামলাকারীর তরফে, এমনকি সংসদে সরকারের তরফে আদালতে এমনটাই জানানো হয়েছিল। সেই ‘অভিযোগ’কে উড়িয়ে দিয়ে সেবির তরফে জানানো হল যে, তারা আদৌ ২০১৬ সাল থেকে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেনি।
গত শুক্রবারেই এই মামলার শুনানিতে সেবি-র তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, তদন্তে তাদের আরও ৬ মাস লাগবে। তবে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, ৬ মাস সময় দেওয়া সম্ভব নয়। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহার বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “তদন্তের জন্য অনন্তকাল সময় নিতে পারে না সেবি। আমরা অগস্টের মাঝামাঝি সময়ে মামলাটি নথিভুক্ত করব। তখনই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে।”
গত জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার বাজার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ এক রিপোর্টে দাবি করে, হিসাবের খাতায় গরমিল করে এবং বেআইনি ভাবে গত এক দশক ধরে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে চলেছে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলি। এই রিপোর্টের পরেই সংস্থাগুলির শেয়ারে ধস নামে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় বিরোধীরা। যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে তদন্তের দাবিও তোলা হয়। যদিও এখনও পর্যন্ত তা মঞ্জুর হয়নি। তবে গত ২ মার্চ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএম সাপ্রের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে সেবিকে তদন্ত করতে বলে শীর্ষ আদালত।