Lok Sabha Election 2024

বাড়তি ভোটেই কি জয় ৭৯ কেন্দ্রে, প্রশ্ন রিপোর্টে

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভোটের দিনগুলিতে রাত ৮টা নাগাদ ভোটদান সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন যে তথ্য হাজির করেছে, তার সঙ্গে চূড়ান্ত ভোটদানের পরিসংখ্যানের ফারাক প্রায় পাঁচ কোটির কাছাকাছি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৮

—প্রতীকী ছবি।

চব্বিশের লোকসভা ভোটে দেশের ১৫টি রাজ্যের ৭৯টি কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভোট ফর ডেমোক্র্যাসি’। তাদের দাবি, নজিরবিহীন ভাবে এ বারের ভোটে প্রাথমিক ভোটগণনা ও চূড়ান্ত ভোট গণনার অঙ্কের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি ভোটের ফারাক দেখা গিয়েছে। যার প্রভাব এই ৭৯ টি কেন্দ্রের ফলাফলে পড়তে পারে। কারণ, ওই সব কেন্দ্রে প্রার্থীরা যে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন, বাড়তি ভোটের অঙ্ক তার থেকে বেশি। রিপোর্টে দাবি, ৭৯টি কেন্দ্রের অনেকগুলিতেই এনডিএ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। আর একে সামনে রেখেই কংগ্রেস আজ বলেছে, রিপোর্ট যদি সত্যি হয়, তাহলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, লোকসভায় বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া সবচেয়ে বেশি আসন পেতে পারত।

Advertisement

এ বারের লোকসভা ভোট সাতটি পর্বে ভোট হয়েছে। কত ভোট পড়ল, সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশন দেরি করেছে বলেই অভিযোগ। সেই প্রেক্ষাপটে এই ধরনের প্রশ্ন সামনে আসায় কংগ্রেস বলেছে, রিপোর্টটিতে যদি কোনও ভুল থেকে থাকে, তা হলে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। আর রিপোর্ট যদি ঠিক হয়, সে ক্ষেত্রে ভারতীয় নির্বাচন ব্যবস্থার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ব্যাপার ঘটেছে বলেই কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা তাঁর এক্স হ্যান্ডলে দাবি করেছেন। কমিশনের তরফ থেকে এখনও এই রিপোর্ট নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভোটের দিনগুলিতে রাত ৮টা নাগাদ ভোটদান সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন যে তথ্য হাজির করেছে, তার সঙ্গে চূড়ান্ত ভোটদানের পরিসংখ্যানের ফারাক প্রায় পাঁচ কোটির কাছাকাছি। সংখ্যাটা ৪ কোটি ৬৫ লক্ষের থেকে কিছু বেশি। রিবাট সংখ্যার এই বাড়তি ভোট নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আগের নির্বাচনগুলিতে দেখা গিয়েছে, ভোটের দিন সন্ধের পর কমিশন যে ভোটদানের শতকরা হিসাব পেশ করতো, তার প্রায় এক শতাংশ ভোট বেড়ে যেত চূড়ান্ত ভোটদানের হিসাবে। তবে চব্বিশের লোকসভা ভোটে ব্যতিক্রম ঘটেছে। সাতটি পর্বে এই ফারাক ৩.২ শতাংশ থেকে ৬.৩২ শতাংশ। অন্ধ্রপ্রদেশে এই হিসাব ১২.৫৪ শতাংশ, ওড়িশায় ১২.৪৮ শতাংশ। রিপোর্ট বলছে, এই বাড়তি ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যাখ্যা হাজির করেনি।

এর পরেই তাৎপর্যপূর্ণ আর একটি তথ্য সামনে নিয়ে এসেছে ‘ভোট ফর ডেমোক্র্যাসি’-র রিপোর্ট। বলা হয়েছে, ১৫টি রাজ্যে ৭৯টি কেন্দ্রে খুব কম ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন এনডিএ-র প্রার্থীরা। দেখা যাচ্ছে, চূড়ান্ত ভোটের পরিসংখ্যানে ভোটদানের যে সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে, তার থেকে কম ব্যবধানে এই কেন্দ্রগুলিতে ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে। এই ৭৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ওড়িশার ১৮টি, মহারাষ্ট্রের ১১টি, পশ্চিমবঙ্গের ১০টি, অন্ধ্রপ্রদেশের ৭টি, কর্নাটকের ৬টি, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানের ৫টি করে কেন্দ্র, বিহার, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার তটি করে কেন্দ্র, অসমের ২টি কেন্দ্র, অরুণাচল প্রদেশ, গুজরাত ও কেরলের একটি করে কেন্দ্র রয়েছে। ‘ভোট ফর ডেমোক্র্যাসি’ বলেছে, কী কারণে এই বিরাট সংখ্যায় বাড়তি ভোট, নির্বাচন কমিশনের তা জানানো উচিত। তবে বাড়তি ভোটের থেকে কম ব্যবধানে যে সব কেন্দ্রে বিরোধী দলের প্রার্থীরা জিতেছেন, সেই প্রসঙ্গ রিপোর্টে বলা হয়নি।

রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ১০টি রাজ্যের ১৮টি কেন্দ্রে এনডিএ প্রার্থীরা খুবই কম ভোটে জিতেছেন। ভোটদান ও ফলাফলের সময় এই কেন্দ্রগুলিতে কারচুপি ও ইভিএমে গোলমালের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী প্রার্থীরা ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের সদস্যরা।

আরও পড়ুন
Advertisement