Durga Puja In New South Wales

৫০ বছরে পদার্পণ করা, কেমন কাটলো বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ সাউথ ওয়েলস-এর দুর্গাপুজো?

দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম দুর্গাপুজো বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ সাউথ ওয়েলস বা সংক্ষেপে BANSW এর। BANSW এর এ বছর পঞ্চাশ বছর পূরণ হল। পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সালে মাত্র নয়টি বাঙালী পরিবারকে নিয়ে।

Advertisement
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৩৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কথায় বলে তিন বাঙালী এক হলেই একটা দুর্গাপুজো শুরু করে। কথাটা ভুল নয়। সিডনি শহরে এখন একুশটা দুর্গাপুজো হয়। তার মধ্যে অন্যতম বড় পুজো, আর খুব সম্ভবত দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম দুর্গাপুজো বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ সাউথ ওয়েলস বা সংক্ষেপে BANSW এর। BANSW এর এ বছর পঞ্চাশ বছর পূরণ হল। পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সালে মাত্র নয়টি বাঙালী পরিবারকে নিয়ে। আর তার ঠিক দুই বছর পরেই ১৯৭৬ সালে শুরু হয় দুর্গাপুজো।

Advertisement

BANSW এর সদস্য আজ পাঁচশোর বেশি পরিবার। তাই পুজোর ভার আর ধার দুটোই বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। সিডনিতে উৎসব বা উত্তরণের মতো জনপ্রিয় এবং বড় পুজো যেমন আছে, তেমনই আছে আরোহণ, স্বাগতম, বা সিডনির কালীবাড়ির পুজো। সব মিলিয়ে সিডনিতে প্রায় কুড়িটা পুজো হয়েছে এ বার। তবু বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন পুজো সবার প্রাণের পুজো।

প্রবাসে নিয়ম নাস্তি। তাই বিদেশের নিয়ম মেনে ২০২২ সাল পর্যন্ত পুজো হতো সপ্তাহান্তে, মাত্র দুইদিন। কিন্তু এমন ভরছিল না। তাই গত বছর থেকে পুজো হচ্ছে চারদিনেরই। তার উপর আছে প্রাক পুজোর আনন্দমেলা। বাঙালী মানেও খাওয়া। আর সেই খাওয়ার আনন্দমেলা যাতে সুচারু ভাবে করা যায়, তাই ভাড়া করা হয়েছিলো মূল হলের বাইরের মাঠ। পুজো শুরুর আগে সিডনির বাঙালী হই হই করে খেয়েছে বিরিয়ানি, ফিশফ্রাই, মাটন চপ, ঘুগনি। তাই পাঁচদিনের পুজো BANSW-তে জমজমাট।

আগে পুজো হতো কনকর্ড গার্লস স্কুলে। সময়ের প্রয়োজনে পুজো সরেছে নতুন ঠিকানায় অবার্ন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। বড় জায়গা, দেদার পার্কিং (বিদেশে এটা গুরুত্বপূর্ণ)। তাই যোগদান আর উৎসাহ অসীম। শনি, রবি তো কোন ছার, বৃহস্পতি বা শুক্রবারের মতো কাজের দিনেও লোকের অভাব নেই। অনেকেই ছুটি নিয়েছেন উৎসবে গা ভাসাতে।

অ্যাসোসিয়েশন জেনারেল সেক্রেটারি সুদীপ সিনহা জানিয়েছেন, “পাঁচদিনের পুজোয় এবার লোক হয়েছিল ৬০০০-এর বেশী। এই বিপুল জনসমাগম সামলানো, প্রসাদ ও ভোগ বিতরণ করা সামান্য কাজ নয়। আর সেই কাজটি সমিতির স্বেচ্ছা সেবক সদস্যরা করেছে খুব দক্ষতার সঙ্গেই।”

সিডনির পুজোর একটা বড় দিক যে এখানে প্রচুর অবাঙ্গালী ভারতীয়, এবং শ্বেতাঙ্গদের চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি। অ্যাসোসিয়েশন পুজোর ফল প্রসাদ আর ভোগ বিতরণ করেন সভ্য বা সভ্য নন, এমন সবাইকে সমান ভাবে। সবাইকেই একই লাইনে দাঁড়াতে হয়। যে সব দিনে হাজার দেড় দুই লোক আসেন, সে সব দিনেও একই নিয়ম। প্রবাসে হয়তো কোলকাতার আড়ম্বর নেই, কিন্তু আন্তরিকতার আয়োজন বোধহয় বেশিই।

কমিটির সভাপতি সৌরভ মুখোপাধ্যায় তাই বলেছেন যে, “এই পুজো শুধুই ধর্মাচরণ নয়। এক বৃহত্তর পরিধিতে আমরা বাঙ্গালীর সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছি বিদেশীদের কাছে।”

এ বারের পুজো প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ শম্পা দস্তিদার বলেছেন পুজোর আয়োজন ও পরিকল্পনায় সকলে একটা পরিবার হয়ে উঠেছিল। আর সব থেকে যেটা ভাল দিক, নতুন প্রজন্ম, যাদের অনেকেই বড় হয়েছে এই বিদেশের মাটিতে, তারাও ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো এই আয়োজনে বরফের সঙ্গে। এটা একটা বড় পাওনা এই পুজোর।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আরও পড়ুন
Advertisement