সনিয়া গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
নিজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব দিলেন সনিয়া গান্ধী। আর দেখা গেল গত পাঁচ বছরে কংগ্রেস ক্ষমতায় না থাকলেও সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রীর। সোনার গহনা থেকে শুরু করে ইটালির বাড়ির ভাগ এবং উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি সব মিলিয়ে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালে সম্পত্তি ৫.৮৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে সনিয়ার।
রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে বুধবারই নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সনিয়া। সাত বার লোকসভা ভোটে জেতার পর এই প্রথম সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। কংগ্রেস সভানেত্রী একটি চিঠি লিখে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যের জন্যই দীর্ঘ দিনের লোকসভা কেন্দ্র রায়বরেলী ছাড়তে হচ্ছে তাঁকে। তবে রাজ্য সভার সাংসদ হিসাবে দেশের কাজ করবেন।
গত বুধবার অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি সনিয়া তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রাজস্থানের রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে। সনিয়ার জমা দেওয়া সেই হলফনামা থেকেই প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর বর্তমান আর্থিক অবস্থার কথা। এমনকি, সনিয়ার বিরুদ্ধে থাকা আইনি মামলার সবিস্তার তথ্যও জানা গিয়েছে সেই হলফনামা থেকে।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী সনিয়া গান্ধীর মোট সম্পত্তির মূল্য ১২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮২২ টাকা। যার মধ্যে অস্থাবর সম্পত্তি ছ’কোটি ৩৮ লক্ষ ১১ হাজার ৪১৫ টাকার। এই অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থ, সোনার গহনা, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া রয়্যালটি, নানা রকম বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য অর্থ, এ ছাড়া বন্ড, ব্যাঙ্কে জমা টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তির একটা বড় অংশ হল সনিয়ার গহনা। কংগ্রেস সাংসদকে সে ভাবে গহনার সাজে দেখা না গেলেও তাঁর মোট ১ কোটি ৭ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৯০ টাকার গহনা রয়েছে বলে লেখা রয়েছে হলফনামায়। এর মধ্যে ১ কেজি ৩০০ গ্রাম সোনার গহনা। যার মূল্য ৪৯.৯৫ লক্ষ টাকা। রয়েছে ৮৮ কেজির রুপোর গহনা এবং বাসনপত্রও। যার মূল্য ৫৭.২ লক্ষ টাকা। এর পাশাপাশি ৯০ হাজার টাকা নগদ অর্থেরও হিসাব দিয়েছেন সনিয়া।
সনিয়ার মোট স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৬.১৫ কোটি টাকার। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সনিয়ার ইটালির বাড়িও। ওই বাড়িতে সনিয়ার ভাগের মূল্য ২৬.৮৪ লক্ষ টাকা।
এর আগে লোকসভা নির্বাচনেও নিজের সম্পত্তির হিসাব দিয়েছিলেন সনিয়া। দেখা যাচ্ছে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রতি পাঁচ বছর অন্তর বেড়েছে। তবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সালে সনিয়ার সম্পত্তি যেখানে ৫৭৪.১৮ শতাংশ বেড়েছিল। সেখানে কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে সরে আসার পর সনিয়ার সম্পত্তি বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমেছে। ২০১৯ সালে ২৭.৫৯ শতাংশ সম্পত্তি বেড়েছিল সনিয়ার। ২০২৪ সালে এই হার আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৮৯ শতাংশ।
হলফনামায় সনিয়ার সম্পত্তি ছাড়াও তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আইনি মামলার হিসাব রয়েছে। সনিয়া জানিয়েছেন, তিনি ১৯৬৪ সালে সিয়েনার ইনস্টিটিউটো সান্টা টেরেসা থেকে বিদেশি ভাষায় (ফরাসি এবং ইংরেজি) তিন বছরের পাঠক্রম করেছেন। কেমব্রিজের লেনক্স কুক স্কুল থেকে ১৯৬৫ সালে ইংরেজি ভাষার উপর একটি সার্টিফিকেট কোর্স করেছেন। আর জানানো হয়েছে, সনিয়ার বিরুদ্ধে একটিও ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়নি।