সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি আব্দুল লতিফ মাগরে। ছবি: সংগৃহীত।
জম্মু ও কাশ্মীরে সাজানো পুলিশি সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে এক ‘জঙ্গি-বিরোধী যোদ্ধা’র ছেলে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল।
সোমবার রাতে শ্রীনগরের হায়দরপোরায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চার জঙ্গির মৃত্যু হয় বলে সরকারি তরফের দাবি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রামবন জেলার বাসিন্দা আমির মাগরে। আমিরের বাবা আব্দুল লতিফ মাগরে ২০০৫ সালে এক জঙ্গিকে পাথর ছুড়ে নিকেশ করেছিলেন। এখনও এলাকার জঙ্গি-বিরোধী গ্রামবাসী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য তিনি।
বুধবার লতিফ বলেন, ‘‘আমার ছেলের সঙ্গে কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ ছিল না। শ্রীনগরের একটি দোকানে কাজ করত। তাকে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো সংঘর্ষে খুন করা হয়েছে।’’
লতিফের দাবি তিনি নিজে জঙ্গি হামলায় আহত হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাকার ছেলেকে জঙ্গিরা খুন করেছিল। জঙ্গি হামলার ভয়ে আমার পরিবারকে ১১ বছরের জন্য এলাকাছাড়া হতে হয়েছিল । কখনও পুলিশ আমার বা পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্রবের অভিযোগও তোলেনি। অথচ আজ বলা হচ্ছে, আমার ছেলে নাকি জঙ্গি! আমার ছেলে মৃতদেহ আসলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য পুলিশের দেওয়া পুরস্কার!’’
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার ২৪ বছরের আমিরকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার কোনও পুরনো অভিযোগের উদাহরণ দিতে পারেননি।
সোমবারের ‘সংঘর্ষে’ নিহতদের মধ্যে পাকিস্তানি জঙ্গি হায়দর রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অন্য দুই নিহতের নাম আলতাফ বাট এবং মুদাসির গুল। আলতাফ ওই বাণিজ্যিক ভবনের মালিক। তাঁর ওই ভবনে একটি দফতর ছিল। মুদাসির দন্তচিকিৎসক ও ব্যবসায়ী। হায়দরপোরার ওই ভবনে তিনি একটি ‘কম্পিউটার সেন্টার’ চালাতেন। পুলিশের দাবি, মুদাসির জঙ্গিদের সহযোগী। তিনিই হায়দর ও তার সঙ্গীকে আশ্রয় দিতে আলতাফের বাণিজ্যিক ভবনে একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, চাকরিতে পদন্নোতি আর বাহবা পাওয়ার লোভে নিরীহ গ্রামবাসীকে জঙ্গি সাজিয়ে খুনের অভিযোগ নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে আগেও উঠেছে উপত্যকায়। চলতি বছরেও জানুয়ারিতেও শ্রীনগরে তিন নিরীহ যুবককে সাজানো সংঘর্ষে খুনের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে।