ordinance

‘মোদী সরকারের অর্ডিন্যান্স অগণতান্ত্রিক’! কেজরীর পাশে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ

দিল্লি সরকারের আমলাতন্ত্রের উপরে নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্ট কেজরীওয়াল সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ করতে মোদী সরকার অর্ডিন্যান্স জারি করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
লখনউ শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ১৮:৩৭
Samajwadi Party will oppose central ordinance on control of administrative services in Delhi, Akhilesh Yadav says after meeting with Arvind Kejriwal

লখনউতে কেজরীওয়ালের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে অখিলেশ। ছবি: পিটিআই।

দিল্লিতে ‘ক্ষমতা দখলের’ জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের জারি করা অধ্যাদেশকে (অর্ডিন্যান্স) ‘অগণতান্ত্রিক’ বললেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। বুধবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিতর্কিত ওই অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন অখিলেশ। সেই সঙ্গে জানিয়েছন, ওই অর্ডিন্যান্সকে ‘আইনের’ রূপ দিতে মোদী সরকার সংসদে বিল আনলে সমাজবাদী পার্টি তার বিরোধিতা করবে।

বুধবার আপ নেতা তথা পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে সঙ্গে নিয়ে লখনউ গিয়ে অখিলেশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কেজরী। ছিলেন, আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহও। বৈঠকের পরে কেজরী বলেন, ‘‘মে মাসে মোদী সরকার অর্ডিন্যান্স জারি করে আমাদের সমস্ত ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ক্ষমতাও আমাদের সরকারের হাতে নেই। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অখিলেশ আমাদের পাশে দাঁড়ানোয় তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’’ অখিলেশ বলেন, ‘‘মোদী সরকারের অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমরা কেজরীওয়ালের পাশের রয়েছি।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের সঙ্গে অর্ডিন্যান্স-সংঘাতে দিল্লির আপ সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাতে গত মাসের শেষ পর্ব থেকে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে চলেছেন কেজরীওয়াল। গত ২৩ মে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মন্ত্রী অতিশী এবং আপ সাংসদ রাঘব চড্ডাকে সঙ্গে নিয়ে নবান্নে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছিলেন তিনি।

এর পর ২৪ মে মুম্বইয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন শিবসেনা (বালাসাহেব) নেতা উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে। ২৫ মে মুম্বইতেই এনসিপি সভাপতি শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। শরদের সঙ্গে বৈঠকের পরে কেজরী জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইবেন তিনি। পরের দিনই আপ প্রধান জানান, কংগ্রেসের দুই নেতার কাছে সাক্ষাতের সময় চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি।

গত ২৭ মে হায়দরাবাদে গিয়ে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র প্রতিষ্ঠাতা কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সমর্থন চান কেজরী। এর পর ১ জুন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন এবং ২ জুন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী, জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কেজরী। মমতা থেকে হেমন্ত পর্যন্ত বিরোধী শিবিরের সব নেতাই তাঁকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। এ বার পাশে দাঁড়ালেন অখিলেশও।

প্রসঙ্গত, গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলে সব বিরোধী দলকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন কেজরী। যদিও কংগ্রেসের তরফে সমর্থনের আশ্বাস মেলেনি।

আরও পড়ুন
Advertisement