মমতা-অখিলেশ। — ফাইল চিত্র।
আগামী শুক্রবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পটনায় বিজেপি বিরোধী দলগুলির বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরীওয়ালদের পাশাপাশি তাঁকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তার আগে উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে হারানোর জন্য নতুন ‘সূত্র’ দিলেন সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। আর ঘটনাচক্রে, তাঁর সেই ‘সূত্রে’ দেখা গেল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ছায়া’।
অখিলেশ এনডিটিভি আয়োজিত একটি আলোচনাচক্রে বলেন, ‘‘বড় জাতীয় দলের সমর্থন পেলে আমরা উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনেই বিজেপিকে হারাব।’’ বিরোধী শিবিরের নেতাদের মতে, এ ক্ষেত্রে ‘বড় জাতীয় দল’ বলতে কংগ্রেসকেই বোঝাতে চেয়েছেন প্রয়াত মুলায়ম সিংহ যাদবের পুত্র। এ ক্ষেত্রে তিনিও মমতার মতোই কংগ্রেস নেতৃত্বের উদ্দেশে ‘জায়গা’ ছাড়ার বার্তা দিতে চেয়েছেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর জন্য ইতিমধ্যেই আঞ্চলিক দলগুলিকে ‘জায়গা’ ছাড়ার সূত্রের কথা বলেছেন মমতা। জানিয়েছেন, যে দল যেখানে শক্তিশালী, সেখানে তাকে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন রুখতে মমতার এই তত্ত্বে সায় দেয়নি। কারণ ওই সূত্র মেনে তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টিকে জায়গা ছাড়তে গেলে লোকসভায় অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থী দিতে পারবেন না রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গেরা।
দেশের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশের ২০১৯ সালের ভোটে মায়াবতীয় দল বিএসপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিলেন অখিলেশ। কিন্তু তাতে বিএসপির লাভ হলেও সমাজবাদী পার্টির আসন বাড়েনি। দলিত নেত্রী মায়াবতী গত কয়েক বছর ধরেই বিরোধী জোটের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। এই পরিস্থিতি অখিলেশ তাঁর পুরনো সহযোগীর (২০১৭-য় উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে হাত মিলিয়েছিল কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি) সঙ্গে আবার সমঝোতা করতে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
লখনউয়ের ওই আলোচনা সভায় অখিলেশ বলেন, ‘‘আমরা মনে করি ‘পিডিএ’ অর্থাৎ পিছড়ে (অনগ্রসর), দলিত এবং অল্পসংখ্যক (সংখ্যালঘু) সমর্থনের উপর ভিত্তি করে বিজেপিকে হারানো সম্ভব।’’ অতীতে কংগ্রেস এবং বিএসপির সঙ্গে সমঝোতার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টি সব সময় সহযোগীর প্রতি উদারতা দেখিয়েছে। আসন ভাগাভাগি নিয়ে চাপ দেয়নি।’’ তাঁর এই মন্তব্য কি স্বস্তি দিতে পারে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গেদের?