দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা কমাতে সরকারকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পরই সোমবার এই হলফনামা। প্রতীকী চিত্র
দূষণের দাপটে সম্পূর্ণ লকটডাউন ঘোষণা করা হতে পারে রাজধানী নয়াদিল্লিতে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এ কথা জানাল কেজরীবাল সরকার। দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা কমাতে সরকারকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পরই সোমবার এই হলফনামা। হলফনামায় সরকার লিখেছে, ‘স্থানীয় স্তরে দূষণের মাত্রা কমাতে সম্পূর্ণ লকডাউনের মতো কড়া পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত দিল্লি। তবে এই পদক্ষেপ তখনই সম্পূর্ণ গ্রহণযোগ্য হবে যখন সমগ্র জাতীয় রাজধানী ক্ষেত্র (এনসিআর) এবং তার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতেও একই পদক্ষেপ করা হবে। দিল্লির যা আয়তন, তাতে শুধু সেখানে লকডাউন করলে তার প্রভাব কমই অনুভূত হবে।’’ একই সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে যদি জাতীয় রাজধানী ক্ষেত্র এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যে এমন পদক্ষেপ করতে বলা হয়, তা হলে দিল্লি সরকারও তেমন কড়া পদক্ষেপ করতে রাজি।’ সঙ্গে জানানো হয়েছে প্রকাশ্যে আবর্জনা পোড়ালে জরিমানা করা হবে। যাতে মানুষজন ঘর থেকে না বেরোন, তার জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ করছে সরকার।
এরই মধ্যে দিল্লিতে সাত দিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। পাশাপাশি, সরকারি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দিল্লিতে সমস্ত নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দীপাবলি-পরবর্তী সময়ে দিল্লি ধোঁয়াশায় ঢেকে যাওয়ার কারণেই এই নির্দেশ। এমনটাই তখন জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আপাতত সোমবার অর্থাৎ ১৫ তারিখ থেকে পরবর্তী সাত দিনের জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নির্মাণ কাজ, যেগুলি থেকে প্রবল ধুলো ছড়ায়, সেগুলি আপাতত ১৪ তারিখ থেকে বন্ধ রাখতে বলেছে দিল্লি সরকার।
গত শনিবারই দূষণে ঢাকা দিল্লি নিয়ে কেজরী সরকারকে কড়া কথা শুনিয়েছিল শীর্ষ আদালত। দিল্লি সরকারের তরফে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেগুলি বাস্তবায়িত হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। জরুরি ভিত্তিতে এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করতেও বলা হয়। তার পরেই সাংবাদিকদের কাছে কেজরীবাল বলেছিলেন, ‘‘১৫ তারিখ থেকে আগামী সাত দিনের জন্য স্কুল বন্ধ থাকবে। ক্লাস হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।’’
দিল্লি ও দিল্লির উপকণ্ঠের অঞ্চলগুলি, যেমন গুরুগ্রাম, নয়ডা, গাজিয়াবাদ দূষণের তীব্র দাপটে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। ফসল তোলার পর মাঠে পড়ে থাকা গোড়া পোড়ানোর কারণেই এমন পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে প্রায় প্রতি বছর। বছর বছর এই নিয়ে আদালতের নির্দেশও আসছে। তবু রাজধানীর চেহারা পাল্টায়নি। এ বছর শত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত সেই ধোঁয়াশায় ঢেকে গিয়েছে দিল্লি শহর।
এর পরই কড়া পদক্ষেপ করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট এবং জানতে চায় দূষণ রোধে কী পদক্ষেপ করতে চলেছে সরকার।