প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
ভোটের আর নয় দিনও বাকি নেই। এখনও রাজস্থানে ইস্তাহার প্রকাশ করে উঠতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের মতে, সব ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবার মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের দিন রাজস্থানের ইস্তাহার সামনে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। মূলত মহিলা, যুবক ও কৃষক ভোটারদের কাছে টানতে এক গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি থাকতে চলেছে ওই ইস্তাহারে।
কর্নাটকের ধাঁচেই রাজস্থানে সাত দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। যার মধ্যে গৃহলক্ষ্মী যোজনায় মহিলাদের বছরে দশ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাহুল গান্ধীর দল। পাল্টা চালে অর্ধেক আকাশের সমর্থন কিনতে বছরে দশ থেকে বারো হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করার পথে হাঁটার কথা ভাবছে বিজেপি। কংগ্রেস যেখানে পাঁচশো টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্যের ১.০৫ কোটি জনতাকে, সেখানে বিজেপি আরও কমে, সাড়ে চারশো টাকায় ওই সিলিন্ডার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে। বিজেপি সূত্রের মতে, রাজ্যের মোট তিনটি শ্রেণির ভোটকে নিশানা করে এগোচ্ছে দল। এরা হলেন মহিলা, যুবসমাজ ও কৃষক। নির্বাচনী ইস্তাহারে তাই ওই তিন শ্রেণিকেই মূলত প্রাধান্য দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
মহিলাদের সরাসরি আর্থিক সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি রাজস্থানে নারীসমাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রতি ইস্তাহারে ফলাও করে রাখার কথা ভেবে রেখেছে বিজেপি। বিশেষ করে মহিলাদের উপর যে কোনও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এ ছাড়া নারীশিক্ষায় গতি আনতে কংগ্রেসের মতোই ছাত্রীদের নিখরচায় পড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা ভাবছে বিজেপি। অন্য দিকে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। সূত্রের মতে বিজেপি পাল্টা কৌশলে মহিলা ছাত্রীরা যাতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বল্প সুদে ঋণ পেতে সক্ষম হন, সে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা ভাবছে।
কংগ্রেসের মতোই কৃষকদের ফসলের সহায়ক মূল্য বাড়ানো সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির। কৃষকদের চাষের কাজে কম পয়সায় বিদ্যুৎ সংযোগ, ঋণ মাফ সংক্রান্ত ঘোষণা করতে পারে বিজেপি। এ ছাড়া যুবসমাজের সমর্থন পেতে ফি বছর নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষা, স্বচ্ছতার সঙ্গে চাকরিতে নিয়োগে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার কথা ভাবছে তারা। বেকার যুবকদের বেকারভাতা দেওয়ার বিষয়টিও দলের চিন্তাভাবনায় রয়েছে। এ ছাড়া যে যুবকেরা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক, তাঁদের স্বল্প সুদে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে বিজেপি।
তেলঙ্গানাতেও এখনও ইস্তাহার প্রকাশ করতে পারেনি বিজেপি। সূত্রের মতে, রাজস্থানের পরেই ওই রাজ্যে ইস্তাহার প্রকাশ করতে চলেছে বিজেপি। ওই রাজ্যে মূলত কৃষকদের সার্বিক উন্নতিতে একাধিক ঘোষণা করার কথা ভেবে রেখেছে দল। যার মধ্যে রয়েছে ঋণ মাফ, কম দামে বীজধান ও সারের ব্যবস্থা করা, ফসলের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা, চাষের ক্ষেতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের দর কম করা এবং কৃষিবিমার পরিমাণ বাড়ানো। এ রাজ্যেও যুব সম্প্রদায়ের কথা মাথায় রেখে স্বচ্ছ নিয়োগের প্রশ্নে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। এ ছাড়া, ক্ষমতায় এলে বর্তমানের কেসিআর সরকারের আমলে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা যোজনাগুলির তদন্ত করারও আশ্বাস নিজেদের ইস্তাহারে উল্লেখ করতে পারে বিজেপি।