Odisha

কোন লাইনে কখন কোন ট্রেন ঢুকে পড়ে বিপত্তি? প্রকাশ্যে বালেশ্বরের রেল ট্র্যাফিক চার্ট

ওড়িশার দুর্ঘটনার পর বাহানগা স্টেশনের রেলের ট্র্যাফিকের চার্ট প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কোন ট্রেন কোন লাইনে কেমন অবস্থায় ছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বালেশ্বর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩ ০৯:৪১
Rail traffic chart shows the moment before the Tripple train accident in Odisha.

ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ছবি: সংগৃহীত।

বালেশ্বরের বাহানগা স্টেশনের কাছে শুক্রবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। ২৮৮ জনের প্রাণ কেড়েছে তিন ট্রেনের এই দুর্ঘটনা। কী ভাবে এমন প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হল? রেলের ট্র্যাফিক চার্ট থেকে তার কিছুটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

বালেশ্বরের রেল দুর্ঘটনার পরেই বাহানগা স্টেশনের রেল ট্র্যাফিক চার্ট প্রকাশ্যে এসেছে। এই চার্ট দেখেই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন রেলকর্মীরা। তাতে দেখা গিয়েছে, ছবি এঁকে বোঝানো হয়েছে চারটি লাইন। তার মধ্যে দু’দিকে রয়েছে দু’টি লুপ লাইন। মাঝে একটি আপ মেন লাইন এবং একটি ডাউন মেন লাইন। আপ লাইনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস আসছিল। ডাউন লাইনে ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস।

Advertisement

করমণ্ডল এক্সপ্রেস আপ লাইন থেকে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে, যেখানে আগে থেকে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। মালগাড়িতে ধাক্কা খেয়ে লাইনচ্যুত হয় করমণ্ডলের একাধিক কামরা। সেগুলি ডাউন লাইনে গিয়ে পড়ে। লাইনচ্যুত কামরায় ধাক্কা খেয়ে বেলাইন হয় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসেরও দু’টি কামরা।

Rail traffic chart shows the moment before the Tripple train accident in Odisha.

বাহানগা স্টেশনের রেল ট্র্যাফিক চার্ট। ছবি: সংগৃহীত।

দুর্ঘটনার পরবর্তী পর্যায়ে দেখা গিয়েছে, করমণ্ডলের ইঞ্জিন সরাসরি মালগাড়ির মাথায় উঠে গিয়েছিল। যা থেকে মালগাড়ির সঙ্গে ওই ট্রেনের সরাসরি সংঘর্ষ হয়েছিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

লুপ লাইন আসলে মেন লাইনেরই অঙ্গ। কোথাও কোথাও তা মেন লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু দূর গিয়ে আবার মেন লাইনের সঙ্গে জুড়ে যায়। রেলের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে এই লাইনের ভূমিকা রয়েছে। সেই লুপ লাইন ধরেই এল বিপত্তি। শনিবার রেলের যে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছিল, তার সঙ্গেও এই বয়ানের সঙ্গতি রয়েছে। সেখানেও সিগনালের ত্রুটির কথা ছিল।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ‘আপ মেন লাইন’ দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। প্রায় একই সময়ে ‘ডাউন মেন লাইন’ দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের। ওই দু’টি ট্রেনের কোনওটিরই বাহানগা বাজার স্টেশনে দাঁড়ানোর কথা নয়। তাই ‘থ্রু’ চলে যাওয়ার জন্য দু’টি ট্রেনেরই সিগন্যাল দিয়েছিলেন স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার। তার আগেই তিনিই প্যানেল থেকে সিগন্যাল দিয়ে তার আগে দু’টি মালগাড়িকে ‘ডাউন’ ও ‘আপ’ লুপলাইনে দাঁড় করিয়েছিলেন। সঠিক সময়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছাকাছি আসে। সিগন্যাল সবুজ দেখে দু’টি ট্রেনই নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে যায়। রেলের ওই সূত্রের দাবি, এর পরেই আপ মেন লাইনের ‘১৭এ পয়েন্ট’ থেকে লুপ আপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল। তার পর সেটি সজোরে ধাক্কা মারে ওই লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে।

শুক্রবারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে রেল। আহতের সংখ্যা ৮০০-র বেশি।

আরও পড়ুন
Advertisement