গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পাঁচ মাস আগে কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে প্রথম জাতগণনার দাবি তুলেছিলেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওবিসি জনগোষ্ঠীর প্রতি ন্যায়বিচারের। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী শনিবার ভোটমুখী রাজ্য মধ্যপ্রদেশে দলের কর্মসূচিতে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে ওবিসিদের প্রকৃত সংখ্যা জানার জন্য জাতসুমারি করাবে কংগ্রেস।
শাজাপুর জেলার কালাপিপলে কংগ্রেসের সভায় রাহুল বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার পরেই, আমরা প্রথম কাজটি যা করব তা হল, দেশের ওবিসিদের সঠিক সংখ্যা জানার জন্য একটি জাতভিত্তিক গণনা করা। কারণ তাঁদের সঠিক সংখ্যা কেউ জানেন না।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিকবার নিজের ওবিসি পরিচয় তুলে ধরে দাবি করেছেন, ওবিসিদের জন্য তাঁর জমানায় যত কাজ হয়েছে, তা আগে হয়নি। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগেই রাহুল অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যাঁরা চালান, সেই সরকারি সচিবদের ৯০ জনের মধ্যে মাত্র তিন জন ওবিসি।
মনমোহন সরকারের আমলে মহিলা সংরক্ষণ বিলে ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের দাবি মেনে নেয়নি কংগ্রেস। ২০১০ সালে সে কারণেই সমাজবাদী পার্টির প্রধান মুলায়ম সিংহ যাদব, আরজেডি সভাপতি লালু প্রসাদেরা ওই বিলের ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু চলতি মাসে সংসদে নরেন্দ্র মোদী সরকারের পেশ করা মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনার সময় কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল মহিলা সংরক্ষণের মধ্যে ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণেরও দাবি তুলেছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, কংগ্রেসের অঙ্ক ওবিসি-দের জন্য ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকলেও আসলে জনসংখ্যায় তাদের হার বেশি। আসল সংখ্যা প্রকাশ্যে এলে ওবিসি কোটায় আরও সংরক্ষণের দাবি উঠবে। তাতে উচ্চবর্ণ বা জেনারেল ক্যাটেগরি এবং ওবিসি, দু’দিক থেকেই চাপে পড়বে বিজেপি। জেডিইউ, আরজেডি-র পাশাপাশি এসপি-ও এই প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশে থাকবে। সন্তুষ্ট হবে তামিলনাড়ুর ডিএমকের মতো ‘ইন্ডিয়া’র শরিকও। ভোট আর জোটের সেই ছক মেনেই রাহুলের ‘জিতনি আবাদি, উতনা হক’ (যে জনগোষ্ঠীর যত সংখ্যা, সংরক্ষণে তার তত অধিকার) স্লোগান।