‘সমীক্ষা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সমকামী অধিকারের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলির নেতৃত্ব। প্রতীকী ছবি।
সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে আরএসএস এবং বিজেপি প্রথম থেকেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। তাদের সংগঠনগুলিও এ নিয়ে নানা স্তরে প্রচারের পাশাপাশি এই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টেও সওয়াল করছে। এরই মধ্যে সঙ্ঘের একটি সংগঠন দাবি করেছে, তাদের সংগঠনের অধীনে সারা দেশে ৩০০ জনেরও বেশি ডাক্তার সমীক্ষা চালিয়ে জানিয়েছে, সমকামিতা একটি ‘মানসিক ব্যাধি’। সমকামী বিবাহকে বৈধ করা হলে ‘রোগীর নিরাময়ের পরিবর্তে সমাজে ব্যাধি বাড়তে পারে।’ মাত্র আড়াই দিনের মধ্যে সঙ্ঘের সংগঠনটির চিকিৎসকেরা ওই সমীক্ষা সেরেছেন।
আর এমন ‘সমীক্ষা’ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সমকামী অধিকারের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলির নেতৃত্ব। মাত্র আড়াই দিনের মধ্যে সেরে ফেলা এই সমীক্ষাকে অনেকেই সরাসরি ভুয়ো এবং মিথ্য বলে দাবি করেছেন। একাধিক সংগঠনের তরফে আবার ওই সমীক্ষার রিপোর্টকে ‘বিপদজনক এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করার পাশাপাশি বলা হয়েছে, সমীক্ষার নামে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। যে সব ‘চিকিৎসকেরা’ ওই সমীক্ষা করেছেন, তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তাঁদের লাইসেন্স বাতিলেরও আর্জি জানিয়েছেন মানবাধিকার ও সমকামী অধিকার রক্ষা কর্মীরা।
একটি মানবাধিকার সংগঠনের নেতা শরিফ রঙ্গনেকর, সিপিএম নেত্রী সুভাষিনী আলি, সমাজকর্মী কিউ মণিবনন-সহ অনেকেই স্পষ্ট ভাষায় সঙ্ঘের সংগঠনের এই ‘সমীক্ষাকে’ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অবৈজ্ঞানিক এবং অমানবিক বলে বিরোধিতা করেছেন। সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া আটকাতে মোদী সরকার যেমন সুপ্রিম কোর্টে তাদের বিরোধিতার বিষয়টি স্পষ্ট করেছে, তেমনই বিজেপির বিভিন্ন সংগঠনও এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র বিরোধিতায় নেমেছে। আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত এ বছরের গোড়ার দিকেই এ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন, সমকামিতা দীর্ঘকাল ধরে ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ ছিল। কিন্তু সঙ্ঘেরই অন্য সংগঠনগুলি ভাগবতের উল্টো মত প্রচার করছে। এমনকি সমকামিতাকে ‘রাক্ষসদের অভ্যাস’ বলেও দাবি করে প্রচারে নেমেছে সঙ্ঘেরই একাধিক শাখা।