প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে সদ্য প্রসব হওয়া যমজ সন্তানকে নিয়ে শুয়ে রয়েছেন মা। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। তারস্বরে কাঁদছে দুই সদ্যোজাতও। কিছু ক্ষণ পরে একে একে থেমে গেল তিন জনের স্বর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের কারণে বৃহস্পতিবার এ ভাবেই তিনটি ভয়াবহ মৃত্যুর সাক্ষী হল বিজেপি শাসিত কর্নাটকের টুমকুরু।
প্রসবযন্ত্রণা ওঠার পরেই টুমকুরু জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৩০ বছরের কস্তুরীকে। কিন্তু আদতে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ওই প্রসূতির আধার কার্ড এবং কর্নাটক সরকারের দেওয়া মাদার কার্ড ছিল না। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। শহরের উপকণ্ঠে ভারতীনগরের বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন তিনি। এর পর সেখানেই দুই সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও শুশ্রূষার অভাবে কস্তুরী এবং তাঁর যমজ সন্তানের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অন্তঃসত্ত্বা কস্তুরী কিছু দিন ধরে তাঁর মেয়ের সঙ্গে টুমকুরে ছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রসববেদনা ওঠার পর তাঁকে একটি অটোতে জেলার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আধার ও মাদার কার্ড না থাকায় ভর্তি করানো হয়নি। এমনকি, চিকিৎসকেরা প্রাথমিক পরীক্ষা ও চিকিৎসা করতেও অস্বীকার করেন। কস্তুরীকে অদূরেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তাঁরা। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান না হওয়ায় বাড়ি ফিরিয়ে আনানো হয়। সেখানেই যমজ সন্তান প্রসব করেন তিনি।
ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তেজনা তৈরি হয় ভারতীনগর এলাকায়। গভীর রাতে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর। টুমকুর জেলা প্রশাসন শুক্রবার জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত তিন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।