দেহরাদূনে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। সোমবার বেশি রাতের দিকে ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। ছবি: পিটিআই।
সোমবার রাতে উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূনে পথ দুর্ঘটনায় ছ’জন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়ে গিয়েছে গাড়ি। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক তত্ত্ব উঠে আসছে। একটি তত্ত্ব বলছে, কয়েকটি গাড়ির মধ্যে রেষারেষি চলছিল। অপর একটি তত্ত্ব বলছে, নিহতেরা মত্ত অবস্থায় গাড়িতে চেপে ফিরছিলেন। ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। যে ইনোভা গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল, তাতে সাত জন যাত্রী ছিলেন। সকলেরই বয়স ১৯ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। গাড়ি দুর্ঘটনার পর একমাত্র জীবিত উদ্ধার হয়েছেন সিদ্ধেশ আগরওয়াল নামে বছর ২৫-এর এক তরুণ। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও কথা বলার পরিস্থিতিতে নেই তিনি। যে অঞ্চলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই পথে সিসি ক্যামেরাও বিকল হয়ে রয়েছে। ফলে ঠিক কী ঘটেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে।
ইনোভা গাড়িটিতে চার তরুণ এবং তিন তরুণী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর থেকে সমাজমাধ্যমে একাংশ দাবি করছে, গাড়িতে ওঠার আগে তাঁরা একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন এবং মত্ত অবস্থায় ছিলেন। সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। যদিও দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে থাকা তরুণ-তরুণীদেরই ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে মন্তব্য করেনি পুলিশ। তাঁরা মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তা নিয়েও পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
প্রথম তত্ত্ব অনুযায়ী, ট্রাকের সঙ্গে দুর্ঘটনার আগে একটি বিএমডব্লিউ-এর সঙ্গে রেষারেষি চলছিল ইনোভার। একটি পর্যায়ে বিএমডব্লিউটি ইনোভাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেলে তার চালকও গতি বৃদ্ধি করেন। সেই কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে এই তত্ত্বে। তবে এ বিষয়েও কিছু বলতে চায়নি পুলিশ। একটি সিসি ফুটেজে দেখা গিয়েছে দুর্ঘটনার কয়েক মিনিট আগেই গাড়ির গতি বৃদ্ধি করেছিল ইনোভাটি। আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, গাড়িটির সানরুফ (উপরের দিকের কাচের আচ্ছাদন) খুলে দু’জন দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেটি নিয়েও মুখে কুলুপ পুলিশের।
দেহরাদূনের ওএনজিসি চওকের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র এক প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ওই রাস্তায় ওএনজিসি চওকের সিসি ক্যামেরাটি বিকল অবস্থায় ছিল। দেহরাদূন স্মার্ট সিটি লিমিটেড জানিয়েছে, শহরে মোট ৫৩৬টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে ১৩৪টি সিসি ক্যামেরা বিকল রয়েছে। তার মধ্যে ওএনজিসি চওকের সিসি ক্যামেরাও রয়েছে।
দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত তরুণের মাথায় চোট রয়েছে। তিনি এখনও পুলিশের কাছে বয়ান দেওয়ার পরিস্থিতিতে নেই। ফলে সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, পুলিশের কাছেও তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। এমন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তরুণের পিতা বিপিন আগরওয়াল সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অর্ধসত্য কিংবা গুজব ছাড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন।