উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত তরুণ। ছবি: সংগৃহীত।
অপহৃত হয়ে যাওয়া সন্তান নাকি তিন দশক পর ফিরে এসেছেন। এই পরিচয় দিয়েই উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদের এক গৃহস্থের বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করেন এক তরুণ। কিন্তু পরে জানা যায়, ভুয়ো পরিচয়ে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে ডাকাতির ছক কষেছিলেন অভিযুক্ত। শুধু ওই একটি বাড়িতেই নয়, এর আগেও একাধিক বাড়িতে এই ভাবে প্রবেশ করে লুট করেন তিনি। ঘটনায় ইতিমধ্যে অভিযুক্ত তরুণকে গ্রেফতার করেছে গাজ়িয়াবাদ পুলিশ। তরুণের আসল বাড়ি রাজস্থানে। একাধিক নাম ভাড়িয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কখনও ইন্দ্ররাজ, কখনও ভীম, কখনও রাজু বলে নিজের পরিচয় দিতেন অভিযুক্ত।
গাজ়িয়াবাদের ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত নিজেকে রাজু বলে পরিচয় দেন বলে জানা গিয়েছে। গৃহস্থের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের পর প্রথমে সেই বাড়িতে চলে যাননি অভিযুক্ত। যোগাযোগ করেন থানায়। পুলিশকে তিনি জানান, ১৯৯৩ সালে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। তখন তাঁর বয়স ছিল সাত বছর। এখন পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পুলিশের সাহায্য চান তিনি। সেই মতো পুলিশ তাঁকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে সমাজমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করে। অভিযুক্তের আসল পরিচয় না জেনে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাঁর খাওয়াদাওয়ারও ব্যবস্থা দেয় পুলিশ। দেওয়া হয় পোশাকও।
পুলিশের প্রকাশ করা তথ্য দেখে একটি পরিবার থানায় যোগাযোগ করে। সব ঠিকঠাকই চলছিল। তবে ওই তরুণের কথাবার্তা ও চালচলনে সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। পুলিশকেও তাঁরা বিষয়টি জানান। এর পর অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। তাতে ধরা পড়ে যান তিনি। তরুণকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গাজ়িয়াবাদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নিমিশ পাতিল জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তরুণ অতীতে নিজের আত্মীয় এবং পরিচিতদের বাড়ি থেকে জিনিসপত্র চুরি শুরু করেছিলেন। তাতে বিরক্ত হয়ে ২০০৫ সালে তরুণকে বাড়ি থেকে বার করে দেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। সেই থেকে নিজের পরিচয় ভাঁড়িয়ে একাধিক বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি এবং সেই বাড়িগুলি থেকে জিনিসপত্র লুট করে পালান। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার পর অন্তত পাঁচটি পরিবারের কাছে আশ্রয় নেন অভিযুক্ত।
মাঝে এক বার ধরাও পড়েছিলেন তিনি। জেলও হয়েছিল। আগে পঞ্জাব, রাজস্থান এবং হরিয়ানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও একই কাজ শুরু করেন তিনি। গাজ়িয়াবাদ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ভিন্রাজ্যে পুলিশের দল পাঠানো হবে।