প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে (৪ থেকে ৬ এপ্রিল) দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হওয়ার কথা। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, কলম্বোর উপর চিনের ক্রমবর্ধমান কৌশলগত প্রভাবকে ঠেকাতে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।
৫ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরাকুমার দিশানায়েকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন মোদী। আর তার পরই প্রতিরক্ষা সমঝোতা-সহ ঋণ কাঠামো পুনর্গঠন, ডিজিটাল সংযোগ, স্বাস্থ্য-সহ বেশ কিছু চুক্তিপত্র সই হবে। শেষ পর্বে কোনও বাধা না এলে এবং দু'দেশই প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করলে সেটা প্রায় ৩৫ বছর আগে ওই দ্বীপরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রত্যাহারের তিক্ত অধ্যায়কে পিছনে ফেলে দেবে বলেই আশা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে এর আগে কোনও প্রতিরক্ষা চুক্তি ছিল না।
নয়াদিল্লির বক্তব্য, ২০২২ সালে যে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলঙ্কা, সে সময় বেজিং নয়, ভারতই সার্বিক ভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। সে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে নয়াদিল্লি। এ বার তার কূটনৈতিক ‘ঋণ’চোকাবে কলম্বো এমনটাই আশা করছে ভারতের কূটনৈতিক শিবির।
ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রির বক্তব্য, ‘‘শ্রীলঙ্কা আমাদের ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ নীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পারস্পরিক বিশ্বাস ও সদিচ্ছার উপর ভিত্তিতে তৈরি এই সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।’’ তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর বিনিয়োগ, প্রচার এবং সংযোগ গভীর করার ক্ষেত্রে আলোকপাত করবে। প্রত্যক্ষ সংযোগ, ডিজিটাল সংযোগ, জ্বালানি সংযোগ এবং আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধিই কাম্য।
মোদীর সফর হতে চলেছে এমন এক সময়ে, যখন শ্রীলঙ্কার ধসে পড়া অর্থনীতি ফের ধীরে ধীরে চাঙ্গা হওয়ার পথে। স্বাভাবিক ভাবে দু’টি দেশের সামনেই সুযোগ রয়েছে নতুন নতুন ক্ষেত্রে অংশীদারি বাড়ানোর। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নয়াদিল্লি সফরে এসেছিলেন দিশানায়েকে। নাম না করে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, চিন নয় আপাতত ভারতকেই তাদের বিদেশনীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। দিশানায়েকের ভারত সফরের তিন মাস পর প্রধানমন্ত্রীর শ্রীলঙ্কা সফর হচ্ছে। নিজস্ব সংবাদদাতা