কেরল সফরে শশী তারুর, শঙ্কায় কংগ্রেস নেতৃত্ব। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে মল্লিকার্জুন খড়্গের কাছে হেরে যাওয়ার এক মাস পর কেরল সফর শুরু করেছেন শশী তারুর। আর তাঁর সেই সফর ঘিরে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে ভাঙনের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার দলীয় নেতৃত্বকে আশ্বস্ত করে তারুর বলেছেন, ‘‘আমাকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। কংগ্রেসের অন্দরে বিভাজন তৈরির কোনও উদ্দেশ্য আমার নেই।’’
গত কয়েক বছর ধরেই কেরলে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কেভি টমাস, এআইসিসির প্রাক্তন মুখপাত্র পিসি চাকো, বর্ষীয়ান প্রাক্তন বিধায়ক কেভি গোপিনাথের মতো নেতা দল ছেড়েছেন। চলতি মাসেও প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সিকে শ্রীধরণ কংগ্রেসের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সিপিএমে যোগ দেওয়ার ‘বার্তা’ দিয়েছেন।
সম্প্রতি কেরল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কান্নুরের কংগ্রেস সাংসদ কে সুধাকরণ বলেন, ‘‘উত্তর কেরলের রাজনৈতিক নেতারা তুলনায় অনেক সৎ এবং সাহসী।’’ তাঁর ওই মন্তব্যের জেরে কোঝিকোড়, তিরুঅনন্তপুরম-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তারুরের সফর দলের ফাটলকে আরও চওড়া করতে পারে বলে আশঙ্কা কেরল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের।
তারুরের সফরকে ‘দলবিরোধী’ হিসাবে চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেছে ওই গোষ্ঠী। বুধবার তারুর সমর্থক যুব কংগ্রেসের নেতারা কোঝিকোড়ে ‘সঙ্ঘ পরিবার এবং ধর্মনিরপেক্ষতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভায় আয়োজন করেছিল। কিন্তু কোঝিকোড়ের সাংসদ রাঘবন এবং যুব কংগ্রেসের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর চাপে তা বাতিল করা হয়।
কোনও নামজাদা কংগ্রেস নেতা পাশে না থাকলেও নুতন প্রজন্মের মালয়ালি সমাজের কাছে তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ তারুরের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত। কেরলে দীর্ঘ দিন ধরেই পাঁচ বছর অন্তর ক্ষমতার পালাবদলের ধারা থাকলেও ২০২১ সালে ‘পরিবর্তনের ঐতিহ্য’ ভুল প্রমাণিত করে ক্ষমতায় ফিরেছে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ জোট। এই পরিস্থিতিতে তারুর বিদ্রোহী হলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকে ফল ভুগতে হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।