শিবাজি-বিতর্কের জেরে ক্ষুব্ধ শিন্ডে শিবির, পরিস্থিতি সামলাতে সক্রিয় গডকড়ী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ছত্রপতি শিবাজির সঙ্গে বিজেপি নেতা নিতিন গডকরীর তুলনা করে শাসক বিজেপি-শিন্ডেসেনা জোটের অন্দরে টানাপড়েল তৈরি করেছেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠীর তরফে প্রকাশ্যে কোশিয়ারির অপসারণের দাবি তোলায় পদ্ম-শিবির অস্বস্তিতে পড়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য শিন্ডে শিবিরের ক্ষোভ প্রশমনে সক্রিয় হলেন স্বয়ং গডকড়ী। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আমাদের ঈশ্বর। এমনকি, বাবা-মায়ের চেয়েও শিবাজি আমাদের কাছে বেশি শ্রদ্ধেয়।’’
গত সপ্তাহে অওরঙ্গাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বরেণ্য মরাঠা ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ দিতে গিয়ে কোশিয়ারি বলেছিলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র বৈগ্রহীক চরিত্রের অভাব নেই। প্রাচীন যুগে ছিলেন ছত্রপতি শিবাজি। পরবর্তী সময়ে ভীমরাও অম্বেডকর। বর্তমান সময়ে নিতিন গডকরী।’’ এর পরেই শিন্ডে শিবিরের বিধায়ক সঞ্জয় গায়কোয়াড় রাজ্যপাল পদ থেকে কোশিয়ারিকে সরানোর দাবি তুলে বলেন, ‘‘অম্বেডকর এবং নিতিনের সঙ্গে এক আসনে বসিয়ে মরাঠা জাতির আরাধ্য শিবাজি মহারাজের অবমাননা করছেন রাজ্যপাল।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছে, শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকলেও উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস যে ভাবে সরকারের অন্দরে ক্ষমতার ‘ভরকেন্দ্র’ হয়ে উঠছেন, তাতে শাসকজোটের অন্দরে টানাপড়েন বাড়ছে। উত্তরাকণ্ডের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী কোশিয়ারিকে শিবাজি-মন্তব্য নিয়ে শিন্ডেসেনার আক্রমণ তারই ইঙ্গিতবাহী।
প্রসঙ্গত, এর আগে আলটপকা মন্তব্যের জন্য বিতর্কে জড়িয়েছেন কোশিয়ারি। গত অগস্টে একটি কর্মসূচিতে রাজ্যপাল কোশিয়ারি বলেছিলেন, ‘‘গুজরাতি এবং রাজস্থানিরা চলে গেলে মুম্বই আর দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী থাকবে না।’’ তাঁর দাবি ছিল, গুজরাতি এবং রাজস্থানি (মারওয়াড়ি) ব্যবসায়ীরা মুম্বই ছাড়লে অর্থসঙ্কটে পড়বে মহারাষ্ট্র। ওই মন্তব্যের জেরে প্রবল বিতর্ক তৈরি হওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। এ বার তাঁর শিবাজি-মন্তব্যে মরাঠা ভাবাবেগ আহত হওয়ার আশঙ্কা করছে সে রাজ্যের শাসকজোট।