BJP

লোকসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী

মুখ্যমন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির ১৩ জন মুখ্যমন্ত্রী ও ১৫ জন উপমুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের লাভ যাতে রাজ্যের প্রান্তিক মানুষের মধ্যে পৌঁছয়, সেই বিষয়ে জোর দেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৯
মুখ্যমন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের পর সকল বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

মুখ্যমন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের পর সকল বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

লোকসভার ফলাফল বিশ্লেষণ ও আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে জয়ের রণকৌশল ঠিক করতে বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দিনের ওই মুখ্যমন্ত্রী পরিষদ বৈঠকের আজ ছিল শেষ দিন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রের বিভিন্ন জনহিতকারী প্রকল্পের লাভ যাতে রাজ্যের প্রান্তিক মানুষের মধ্যে পৌঁছয়, সেই বিষয়ে জোর দেন। কেন্দ্র সরকার মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কী ভাবে দায়বদ্ধ, তা তুলে ধরার উপরেও জোর দেওয়া হয়।

Advertisement

লোকসভার ভোটেই স্পষ্ট, প্রত্যাশিত ফল হয়নি বিজেপির। ফলে শরিক নির্ভর সরকার গড়তে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। সামনেই হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, জম্মু ও কাশ্মীর এবং ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় এনডিএ সরকার রয়েছে। ওই রাজ্যগুলিতে সরকার ধরে রাখার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীর এবং ঝাড়খণ্ডে কী ভাবে সরকার গড়া সম্ভব, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। দু’দিনের ওই মুখ্যমন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির ১৩ জন মুখ্যমন্ত্রী ও ১৫ জন উপমুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে একাধিক রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া কিছু প্রকল্প বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যগুলিতে প্রয়োগ করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়।

বিজেপি সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের গ্রামীণ সচিবালয় যোজনা (গ্রামীণ এলাকায় সচিবালয়), ত্রিপুরা সরকারের জনগণের কাছে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দিতে ‘আমার সরকার’ প্রকল্প, গুজরাত সরকারের ঘরে ঘরে সৌর বিদ্যুত প্রকল্প, সরকারি চাকরিতে দ্রুত নিয়োগে অসম সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। অন্য রাজ্যগুলিকেও ওই মডেল তাদের রাজ্যে প্রয়োগ করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্র সরকারের যে জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনাগুলি দেশ জুড়ে চালু রয়েছে, তা যাতে সমাজের একেবারে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছয়, সে বিষয়েও রাজ্য সরকারগুলিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির এক নেতার কথায়, “সরকারি প্রকল্পের লাভ সমাজের শেষ মাথায় থাকা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রশ্নে সরকার কতটা আন্তরিক, সেই বার্তা যাতে পৌঁছয়, সেই বিষয়টিতে নজর দিতে বলা হয়েছে।”

লোকসভার ফলাফলের পর থেকেই উত্তরপ্রদেশের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নীতির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ করেছেন ওই রাজ্যের দুই উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য ও ব্রিজেশ পাঠক। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি আরএসএস নেতৃত্বের কাছেও যোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন কেশবপ্রসাদ ও ব্রিজেশ। সূত্রের মতে, এ বারের দু’দিনের বৈঠকে যোগীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সামনেই রাজ্যের ১০টি বিধানসভায় উপনির্বাচন রয়েছে। যে কারণে এখনই যোগীকে তাঁর পদ থেকে সরানোর কথা ভাবা হচ্ছে না বলে সূত্রের খবর। তা ছাড়া যোগীর পিছনে আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে বলেও খবর। আরএসএস যে আপাতত যোগীকেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায়, সেই বার্তাও প্রচ্ছন্ন ভাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সূত্রের মতে, যোগীর পিছনে আরএসএস ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের বড় সংখ্যক বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যোগীকে সরিয়ে দিলে উত্তরপ্রদেশে বিরোধীদের সুবিধে করে দেওয়া হবে। তাই যোগীর বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ বিদ্রোহ করলেও এখনই কোনও পক্ষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষপাতী নয় দল। বরং যোগীকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে বিদ্রোহের সুর আরও তীব্র হয় কি না, তা দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন
Advertisement