Manipur-Mizoram Conflict

বীরেন-লালডুহোমা তরজা তুঙ্গে, কোর্টে যাওয়ার হুমকি

বীরেনের দফতর দাবি করে, মায়ানমার-ভারত-বাংলাদেশের সংলগ্ন অঞ্চলগুলি থেকে বহু দশক ধরে পরিকল্পনার মাধ্যমে জ়ো-কুকি-চিন খ্রিস্টান দেশ গঠনের পরিকল্পনা চলছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১০
এন বীরেন সিংহ।

এন বীরেন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

মণিপুরের সংঘর্ষ নিয়ে মিজ়োরাম বনাম মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তরজা থামা দূরের কথা, তা শেষ পর্যন্ত আদালতেও গড়াতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহকে ‘রাজ্যের বোঝা’ বলে মন্তব্য করে মণিপুরে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলেছিলেন মিজ়োরামের মুখ্যমন্ত্রী লালডুহোমা। জবাবে লালডুহোমার অতীত টেনে এনে ব্যঙ্গ করে এবং তাঁকে বিভেদকামী বলেও ইঙ্গিত করে বীরেন সিংহের দফতর। তা নিয়ে শনিবার মিজ়োরামের মুখ্যমন্ত্রীর তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেব বলেন, “লালডুহোমা নিজের বক্তব্যে অনড় আছেন। তিনি কোনও মনগড়া অভিযোগ করেননি, মণিপুর প্রসঙ্গে যা বাস্তব সেই কথাই বলেছেন। প্রয়োজনে বীরেন আদালতে যেতে পারেন। সেখানে তাঁকে মুখের মতো জবাব দিতে আমরা তৈরি। বীরেন সিংহ লালডুহোমাকে নিয়ে যে সব আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন তাতে আমরাই আগে তাঁর বিরুদ্ধে মামহানির মামলা করতে পারি।”

বীরেনের দফতর দাবি করে, মায়ানমার-ভারত-বাংলাদেশের সংলগ্ন অঞ্চলগুলি থেকে বহু দশক ধরে পরিকল্পনার মাধ্যমে জ়ো-কুকি-চিন খ্রিস্টান দেশ গঠনের পরিকল্পনা চলছে। অনুপ্রবেশ, ভূমি দখল, ভূমিপুত্রদের বাস্তুচ্যুতি, স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা, কুকি-চিন অঞ্চলের একীকরণ এবং অবশেষে স্বশাসন- এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বৃহত্তর মিজ়োরাম তৈরির জন্য অবৈধ কুকি-চিন অনুপ্রবেশকারীদের মণিপুরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। মিজ়োরামের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে এই ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বার্থকে সমর্থন করছেন।

বীরেনের দফতর আরও দাবি করে, মণিপুর যে ভাবে অনুপ্রবেশ ও মাদক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তার মূল উৎসই হল মায়ানমার। তাই অনুপ্রবেশ, পাচার ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে রাজ্য ও কেন্দ্র। মণিপুর হয়ে মাদকের পাচার বর্তমানে প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। অন্য দিকে, মিজ়োরাম এখন অবৈধ অস্ত্র এবং মাদকের পছন্দের রাস্তা হয়ে উঠেছে। তার জন্য সীমান্ত বন্ধ করা দরকার। কিন্তু সীমান্ত বন্ধে কেন্দ্রের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে চলেছেন মিজ়ো মুখ্যমন্ত্রী। উল্টে তিনি মণিপুর সরকারের আইনত ন্যায্য পদক্ষেপগুলিকে 'জনজাতি বিরোধী' হিসাবে চিহ্নিত করতে ব্যস্ত।

বিশ্বজিৎ দেব বলেন, “লালডুহোমা যা বলেছেন তা এখন মণিপুরের সকলের দাবি এবং উত্তর-পূর্বের মানুষের মনের কথা। মণিপুরে শান্তি ফেরাতে হলে বীরেন সিংহকে সরানোর কোনও বিকল্পই নেই। তিনি যত দিন পদ আঁকড়ে থাকবেন, রক্তক্ষয় বন্ধ হবে না।” সীমান্ত সিল করতে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ জানান, “লালডুহোমা বলেছেন, কেন্দ্র সীমান্ত সিল করলে বা সীমান্তের দুই পারে অবাধ গতিবিধির নিয়ম বন্ধ করলে রাজ্য বাধা দিতে পারে না। কিন্তু নীতিগত ভাবে দুই পারে জ়ো জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেওয়াল তোলা তিনি কখনও মেনে নেবেন না।”

এ দিকে কুকি যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ জানিয়েছে, জিরিবামে ১১ নভেম্বর সিআরপির সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যাওয়া ১০ জন ও অন্য দুটি ঘটনায় নিহত ২ জনের দেহ ৫ ডিসেম্বর তুইবং পিস গ্রাউন্ডে একত্রে সমাধিস্থ করা হবে। ওই দিন মৃতদেহ নিয়ে বিরাট মৌন মিছিল বের হবে। এলাকায় পালিত হবে সর্বাত্মক বন্‌ধ।

আরও পড়ুন
Advertisement