মুকুলই কি তবে পাশা বদলালেন? বৃহস্পতিবার বম্বে হাইকোর্টের সামনে। ছবি : পিটিআই।
তাঁর হাতে মামলা আসার পর প্রথম দিন শুনানি মুলতবি হয়েছিল। জামিন পাননি শাহরুখ-পুত্র। দ্বিতীয় দিনও তাই। তবে তৃতীয় দিনে ‘মুকুল-ম্যাজিক’! শাহরুখ-পুত্রের জামিন ছিনিয়ে আনলেন ভারতের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি। আরিয়ান জামিন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার বম্বে হাই কোর্টের বাইরে প্রবীণ আইনজীবী বলেন, ‘‘আরিয়ান খান, মুনমুন ধামেচা এবং আরবাজ মার্চেন্টের জামিন হল আজ। তবে ওঁরা এখনই জেল থেকে বেরোতে পারবেন না। জামিনের রায় এখনও হাতে আসেনি। সেটা এলে তবেই জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশা করছি, ওঁরা কাল অথবা শনিবার জেল থেকে বাইরে আসতে পারবেন। তবে এ নিয়ে আজ আর কোনও মন্তব্য করব না।’’
গত ৮ অক্টোবর থেকে আর্থার রোড জেলে বন্দি আরিয়ান। ২ অক্টোবর ধরা পরার পর আরিয়ানকে গ্রেফতার করা হয় ৩ অক্টোবর। গত ২৫ দিনে বেশ কয়েক বার জামিনের আবেদন করেছেন শাহরুখ-পুত্র। কিন্তু প্রতিবারই আবেদন খারিজ হয়েছে। নিম্ন আদালতে শাহরুখ-পুত্রের আইনজীবী ছিলেন সতীশ মানশিণ্ডে। তারকাদের আইনজীবী হিসেবে বলিউডে সতীশের খ্যাতি আছে। সাফল্যের খতিয়ানও বেশ লম্বা। তবে আরিয়ানের পক্ষে সতীশের যাবতীয় সওয়াল বিফলে গিয়েছে। বহু চেষ্টা করেও জামিন পাননি মাদক মামলার ‘এক নম্বর অভিযুক্ত’ (আরিয়ানকে এই নামেই বারবার সম্বোধন করেছেন এনসিবির আইনজীবীরা)।
গত ২৬ অক্টোবর আরিয়ানের হয়ে প্রথম সওয়াল করেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল। আরিয়ানের তৃতীয়বারের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল বম্বে হাই কোর্টে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই আবেদনের শুনানি তিন বার মুলতবি হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামিন পান আরিয়ানরা।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছ তিন দিনের শুনানিতে মুকুলই কি তবে পাশা বদলালেন?
মুকুলের কর্মজীবন বর্ণময়। দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক অলিন্দেও তাঁর অনায়াস বিচরণ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির ঘনিষ্ঠ বন্ধু মুকুল গুজরাত দাঙ্গা মামলায় গুজরাত সরকারের তরফে মামলা লড়েছিলেন। সেখানও সাফল্য এসেছিল। দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালনও করেছেন ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ দেশে মোদী জমানা শুরু হওয়ার প্রথম তিন বছরই অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন মুকুল। ২০১৯ সালেও মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়েছেন। এমন একজন বর্ষীয়ান আইনজীবী শাহরুখ পুত্রের হয়ে লড়লেন এবং প্রাথমিক ভাবে জিতলেন। স্বভাবতই একে ‘মুকুল ম্যাজিক’ ছাড়া আর কী-ই বা বলা যেতে পারে?