জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর করতে চান ওড়িশার জেলবন্দি মাওবাদী নেতা। — প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। বর্তমানে তিনি রয়েছেন বর্ধমান সংশোধনাগারে। অর্ণবের মতো উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ওড়িশার জেলবন্দি মাওবাদী নেতা সব্যসাচী পণ্ডা। তিনিও অর্ণবের মতোই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। বছর পঞ্চান্নের সব্যসাচী চান জনপ্রশাসন নিয়ে পড়াশোনা করতে। ওড়িশা রাজ্য মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করতে চান তিনি।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে সব্যসাচীকে গ্রেফতার করেছিল ওড়িশার পুলিশ। সেই থেকে পড়শি রাজ্যের ব্রহ্মপুর সংশোধনাগারে রয়েছেন তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওড়িশার একাধিক জেলায় ১৩০টিরও বেশি মাওবাদ-সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন সব্যসাচী। ওড়িশার এক নিম্ন আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। বুধবার সংশোধনাগারের আধিকারিক জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী সব্যসাচী।
জেলবন্দি অবস্থাতেই স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করেছেন ওড়িশার ওই মাওবাদী নেতা। দু’বছর আগেই ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেছেন তিনি। এ বার চাইছেন জনপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করতে। পিটিআই জানিয়েছে, ব্রহ্মপুর জেল কর্তৃপক্ষের কাছে মোট ছ’জন কয়েদি স্নাতকোত্তর করার জন্য নথিপত্র জমা দিয়েছেন। ছ’জনের মধ্যে সব্যসাচী ছাড়া আরও তিন জন আসামি রয়েছেন। বাকি দু’জন বিচারাধীন বন্দি।
ব্রহ্মপুর সংশোধনাগারের সিনিয়র সুপার ডিএন বারিক জানিয়েছেন, দু’বছরের স্নাতকোত্তরের জন্য ছ’জন কয়েদির নথিপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সংশোধনাগারের এক শিক্ষক সনাতক খিল্লর জানান, কয়েদিরা স্নাতকোত্তরের জন্য ভর্তি হলে তাঁদের প্রয়োজনীয় বইপত্র দেওয়া হবে। তাঁরা নিজে নিজেই পড়াশোনা করবেন এবং পরীক্ষায় বসবেন।
ওড়িশার সব্যসাচীর মতো পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন মাওবাদী নেতা অর্ণব। মেধাবী অর্ণব খড়্গপুর আইআইটিতে পড়াশোনা করতেন। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন আইআইটিতে। কিন্তু তিনটি সিমেস্টারের পরে এক দিন হঠাৎ করে খড়্গপুর আইআইটির ক্যাম্পাস ছেড়ে ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরে সিপিআই (মাওবাদী)-এর রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে তিনি ১৯৯৮ সালে যোগ দিয়েছিলেন ওই সংগঠনে। গ্রেফতারির পর জেলে বসে পড়াশোনা করে পিএইচডি-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম হন অর্ণব। কিন্তু তাঁর পিএইচডি করার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পরে অবশ্য সেই জটিলতা কাটে এবং বর্তমানে জেলবন্দি অর্ণব বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করছেন।