মণিপুরে অশান্তি চলছেই। ছবি: সংগৃহীত।
মার এবং জ়োমি জনজাতির সংঘর্ষে আরও এক বার উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর। মারদের এক নেতার উপর হামলাকে কেন্দ্র করে চুরাচান্দপুর জেলায় চলতি সপ্তাহের শুরুতেই অশান্তি শুরু হয়। সেই আবহে মঙ্গলবার রাতে ফের দুই জনজাতির সংঘর্ষ বাধল জেলার বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার চুরাচান্দপুরে কার্ফু জারি হওয়ার পরেই বৈঠকে বসেন মার এবং জ়োমি জনজাতির প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ বৈঠকের পর দু’পক্ষে শান্তিচুক্তিও হয়। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই সংঘর্ষ বাধে দুই জনজাতির মধ্যে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে চুরাচান্দপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। ছোড়া হয় পাথর, ভাঙচুর করা হয় বহু যানবাহন। কোথাও কোথাও গোলাগুলিও চলে। তবে ওই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
গত রবিবার সন্ধ্যায় চুরাচান্দপুরের জেনহাঙে ভিকে মন্টেসরি স্কুলচত্বরের ভিতর মারদের সংগঠন ‘মার ইনপুই’-এর সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড মারের উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। সেই হামলার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মারেরা। গোটা জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, রিচার্ডের গাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মেরেছিল একটি দু’চাকার গাড়ি। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয়। সেই বিবাদ থেকেই একসময়ে রিচার্ডের উপর হামলা চালানো হয়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নেতার উপর হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন মারেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার সকাল থেকে ওই জেলায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা জারি করা হয়। চুরাচান্দপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়ে দেন, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকাকালীন অনুমতি ছাড়া কোনও মিছিল, সমাবেশের আয়োজন করা যাবে না। কেউ লাঠি, পাথর বা কোনও রকমের অস্ত্রও বহন করতে পারবেন না।
২০২৩ সাল থেকেই কুকি ও মেইতেইদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অশান্ত মণিপুর। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর পরিস্থিতি খানিক নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে রাজ্য জুড়ে। চলতি মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘অবাধ চলাচল’ নির্দেশের প্রতিবাদে মণিপুরের কুকি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। গত ১৩ মার্চ বন্ধ প্রত্যাহার করা হলেও কুকিরা জানিয়ে দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ তাঁরা মানবেন না৷ কুকিদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ‘অবাধ চলাচল’-এর বিরোধিতা করে যাবেন।