আত্মহত্যার চেষ্টার ভিডিয়ো করলেন স্বামী। প্রতীকী ছবি।
সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। তাঁকে বাধা দেওয়া দূরের কথা, বরং সেই মুহূর্তের ভিডিয়ো করছিলেন স্বামী। আত্মহত্যার চেষ্টা তখন সফল না হলেও পরে একই ভাবে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই মহিলা। ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। এই ঘটনায় ওই মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনাটি কানপুরের। মৃতের নাম শোভিতা গুপ্তা। তাঁর আত্মহত্যার চেষ্টার ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করার অভিযোগে তাঁর স্বামী সঞ্জীবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, কানপুরের এই দম্পতির মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগে থাকত। সঞ্জীবের বিরুদ্ধে পণের দাবিতে স্ত্রীকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। দম্পতির তিন বছরের এক কন্যা সন্তানও রয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি দিনই নানা কারণে তাঁরা দু’জন ঝগড়া করতেন। মঙ্গলবার সেই ঝগড়া চরমে পৌঁছয়। সকাল থেকেই অশান্তি চলছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এক সময় রাগের মাথায় গলায় দড়ি দিতে উদ্যত হন শোভিতা। কিন্তু তাঁকে বাধা না দিয়ে ঘরে বসেই তার ভিডিয়ো করেন সঞ্জীব। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়ো দেখিয়ে শোভিতার বাবা-মায়ের কাছে তাঁদের মেয়ের কাণ্ডকারখানার জন্য নালিশ করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।
সঞ্জীব জানান, তাঁদের ঝগড়া থেমে যায় তার পরেই। এক সঙ্গে তাঁরা দুপুরের খাবারও খেয়েছিলেন। তার পর মেয়েকে নিয়ে দু’জন ছাদে উঠেছিলেন। সেখানে ফের অশান্তি বাঁধে। ছাদ থেকে রাগ করে নেমে আসেন শোভিতা। কিছু ক্ষণ পর ঘরে গিয়ে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান সঞ্জীব। সঙ্গে সঙ্গে ডাকাডাকি করে লোক জড়ো করেন। স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শোভিতার মৃত্যুর পর তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর বাবা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর জামাই পণের জন্য মেয়ের সঙ্গে অশান্তি করতেন। নিয়মিত অত্যাচার করা হত বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। সঞ্জীবের মোবাইলে আত্মহত্যার চেষ্টার ভিডিয়ো দেখে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প ‘দেনাপাওনার’র কথা নিরুপমার কথা অনেকের মনে পড়তে পারে। সময় এগিয়েছে। স্থান বদলেছে। পরিস্থিতি বদলায়নি।