Prosenjit Chatterjee

রাষ্ট্রপতি ভবনে নেতাজির বদলে প্রসেনজিৎ? দিনভর বিতর্ক, টুইট মুছলেন মহুয়া

তবে এর মধ্যেই জন্ম নিয়ে ফেলল নেতাজির ছবি ঘিরে আরও এক বিতর্ক। সৌজন্য বিজেপি সাংসদ এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ২০:২০

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নতুন এক নেতাজি বিতর্কে ঢুকে পড়লেন মহুয়া মৈত্র। বিতর্ক এতটাই গড়াল যে, সকালে করা টুইট বিকেলে মুছে ফেলতে হল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে।

২৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ভবনে নেতাজির একটি ছবির আবরণ উন্মোচন করেছিলেন রামনাথ কোবিন্দ। সেই ছবি টুইট করে মহুয়া মৈত্র সোমবার দাবি করেন, এটি ‘গুমনামী’-র প্রসেনজিতের ছবি। নেতাজির ছবি নয়। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় হইচই। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ মহুয়ার পক্ষ নেন, কেউ বলেন ভুল তথ্য দিচ্ছেন তিনি। বিতর্কের জল এতটাই গড়ায় যে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবৃতি দিয়ে জানাতে হয় এটি নেতাজিরই ছবি। পোস্ট করেন ‘গুমনামী’ ছবির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁরাও স্বীকৃতি দেন সরকারি দাবিকেই। পরে দেখা যায় মহুয়া তাঁর টুইটটি ডিলিট করে দিয়েছেন।

Advertisement

মহুয়া মৈত্র তাঁর টুইটে লিখেছিলেন, ‘রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ৫ লক্ষ টাকা দান করার পর রাষ্ট্রপতি নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানালেন প্রসেনজিতের ছবি উদ্বোধন করলেন।... ঈশ্বর ভারতকে বাঁচান, (কারণ সরকার ভারতে বাঁচাতে পারবে না)।’ রাষ্ট্রপতির হ্যান্ডল থেকে করা ২৩ জানুয়ারির একটি টুইট-ও সঙ্গে জুড়ে দেন মহুয়া। তারপরই শুরু হয় বিতর্ক।

শেষ পর্যন্ত সরকারকে এই নিয়ে বয়ান প্রকাশ করতে হয়। সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারের বয়ানে বলা হয়েছে, এটি নেতাজির আসল ছবি থেকেই আঁকা। বলা হয়, ‘এই নিয়ে বিতর্ক ভিত্তিহীন। দুর্বল গবেষণার ফল।’

আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ছবি ‘গুমনামী’-র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় বিকেলে নেতাজির ১৯৪৩ সালে তোলা একটি ছবি টুইট করে লেখেন, ‘রাষ্ট্রপতি ভবনে এই ছবিটির উপর ভিত্তি করেই তৈলচিত্র এঁকেছেন বিখ্যাত শিল্পী পরেশ মাইতি। যদি সেলুলয়েডের প্রসেনজিতের সঙ্গে এর কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়, তার কৃতিত্ব সোমনাথ কুণ্ডুর।’ সোমনাথ কুণ্ডু গুমনামী ছবিটির মেকআপ শিল্পী।

টুইট করেন ছবির প্রধান চরিত্রাভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘আমি পরেশ মাইতিকে সাধুবাদ জানাতে চাই আমাদের জাতীয় নায়ক নেতাজির এমন একটি ছবি আঁকার জন্য। একজন অভিনেতা হিসাবে আমি উচ্ছ্বসিত যে মানুষ এই ছবিটির সঙ্গে আমার গুমনামী ছবির লুকের মিল পেয়েছেন।’ টুইট করেন বসু পরিবারের সদস্য ও বিজেপি নেতা চন্দ্র বসু। তিনি লেখেন, ‘রাষ্ট্রপতি ভবনে উন্মোচিত নেতাজির ছবিটি একটি স্থিরচিত্র থেকে নেওয়া। একজন শিল্পীর চোখে নেতাজি’।

এ সবের পরই নিজের সেই বিতর্কিত টুইট ডিলিট করে দেন মহুয়া মৈত্র।

তবে এর মধ্যেই জন্ম নিয়ে ফেলল নেতাজির ছবি ঘিরে আরও এক বিতর্ক। সৌজন্য বিজেপি সাংসদ এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর। সম্প্রতি রামমন্দিরের জন্য এক কোটি টাকা দান করা গম্ভীরও ২৩ জানুয়ারি নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি নেতাজি বলে ছবি দিয়েছেন প্রয়াত এক বাঙালি অভিনেতার। ১৯৬৬ সালে নেতাজির জীবনের উপর তৈরি হেমেন গুপ্তর সিনেমার একটি স্থিরচিত্র এটি। অভিনেতা অভি ভট্টাচার্য। নেটাগরিকরা এই ভুল ধরিয়ে দিলেও গম্ভীর কিন্তু টুইটটি এখনও পর্যন্ত সরাননি।

আরও পড়ুন
Advertisement