Split in NCP

মহারাষ্ট্রে এ বার কি ভাঙন অজিতের এনসিপিতে? জল্পনা উস্কে দিয়ে শরদের সঙ্গে বৈঠক ভুজবলের

শরদ পওয়ারের মুম্বইয়ের বাড়ি সিলভার ওকে গিয়ে সোমবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ছগন ভুজবল। যদিও দুই নেতার কেউই বৈঠকের কারণ এবং আলোচ্যসূচি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ১৭:৪৯

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

লোকসভা ভোটের সময়ই শোনা গিয়েছিল নাসিকে টিকিট না পেয়ে তিনি ‘ক্ষুব্ধ’। নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে এনডিএর বিপর্যয়ের পরে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল, উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি ছাড়ছেন তিনি। সোমবার সেই জল্পনা আরও উস্কে এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করলেন মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত) জোটের সরকারের মন্ত্রী ছগন ভুজবল।

Advertisement

শরদের মুম্বইয়ের বাড়ি সিলভার ওকে গিয়ে সোমবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ভুজবল। দুই নেতার বৈঠকে মরাঠা সংরক্ষণের বিষয়টি এসেছে বলেও সূত্রের খবর। যদিও শরদ বা ভুজবল শিবির বৈঠক নিয়ে কিছু বলেননি। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে মরাঠা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়েছিল মহারাষ্ট্র বিধানসভায়। তাতে শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে রাজ্যে মরাঠাদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথা বলা রয়েছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর নেতা ভুজবল সে সময় প্রকাশ্যে মরাঠা সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছিলেন। গত ৯ জুলাই বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র তিন দল— কংগ্রেস, উদ্ধবসেনা এবং এনসিপি (শরদ) মরাঠা সংরক্ষণ নিয়ে সরকারের ডাকা বৈঠক বয়কট করেছিল।

একদা শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভুজবল। বালাসাহেব তাঁকে মুম্বইয়ের মেয়র করেছিলেন। কিন্তু উদ্ধবের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে শরদ পওয়ার কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি গড়ার সময় ভুজবলও তার সঙ্গী ছিলেন। এনসিপি পরিষদীয় নেতা হিসাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। গত বছর জুলাইয়ে ভাইপো অজিত কাকা শরদের দল ভেঙে বিজেপি-শিন্ডেসেনার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় থেকেই ভুজবল তাঁর সঙ্গী। আগামী অক্টোবরে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে ভুজবল ফের শরদ শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে এনডিএ-র সার্বিক খারাপ ফলের জন্য অজিতের এনসিপি-র সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের হাত মেলানোকে দায়ী করা হয়েছিল আরএসএস মুখপত্রে লেখা নিবন্ধে। তার পরে প্রকাশ্যে আরএসএসের সমালোচনা করেছিলেন ভুজবল। মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেয়েছে ১৭টি আসন। বিজেপি সাতটি, দুই শরিক শিবসেনা (শিন্দে) ও এনসিপি (অজিত) গোষ্ঠী যথাক্রমে জিতেছে ন’টি ও একটি আসন। পাঁচ বছরের আগের ফল থেকে প্রায় দু’ডজন আসন কম পেয়েছে এনডিএ জোট।

সঙ্ঘের মুখপত্রে বলা হয়েছিল, অহেতুক রাজনীতির ঘুঁটি সাজাতে গিয়ে দল ভাঙানো বিজেপির পক্ষে হিতে বিপরীত হয়েছে। যার উদাহরণ মহারাষ্ট্র। রাজ্যে বিজেপি-শিবসেনা সরকারের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও এনসিপি-তে ভাঙন ধরানো হয়। যার ফলে অজিত পওয়ার এনডিএতে যোগ দেন। সঙ্ঘের অভিযোগ, অজিতের এনডিএতে অন্তর্ভুক্তির ফলে বিজেপির পুরনো কর্মীরা মনঃক্ষুণ্ণ হন। কারণ, তাঁরা বরাবরই কংগ্রেসের ভাবধারার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছেন। কংগ্রেসি ভাবধারার নেতা অজিতের এনডিএতে যোগদানে ‘ব্র্যান্ড বিজেপি’-র বাজারদরও নেমে যায়।

তা ছাড়া, ভোটের আগে এনডিএতে যোগ দেওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে যে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, সে কথাও লেখা হয়েছে সঙ্ঘের মুখপত্রে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ভুজবল ২০১৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সঙ্ঘের মুখপত্রের ওই নিবন্ধ প্রসঙ্গে এর পরে খোঁচা দিয়ে ভুজবল বলেছিলেন, ‘‘অশোক চহ্বাণ, মিলিন্দ দেওরাও তো বিজেপির সঙ্গী হয়েছিলেন।’’

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী চহ্বাণ লোকসভা ভোটের আগে সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের মন্ত্রিসভার সদস্য মিলিন্দ যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির সহযোগী শিন্ডেসেনায়। ঘটনাচক্রে, চহ্বাণ এবং দেওরার বিরুদ্ধেও নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি আরএসএসকে নিশানা করে ভুজবল বলেছিলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে কেন বিজেপির ফল ও রকম হল? সেখানে তো তেমন কোনও সহযোগীকে নিতে হয়নি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement