মহুয়া মৈত্র। — ফাইল চিত্র।
সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে গত শুক্রবার। খুব শীঘ্রই তাঁর দিল্লি বাংলো হাতছাড়া হতে পারে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের। সাংসদের বাংলো খালি করার জন্য মহুয়াকে নির্দেশ পাঠাতে বলল সংসদের আবাসন কমিটি। এই মর্মে তারা চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় আবাসন এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রককে। যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, এই সংক্রান্ত কোনও চিঠি এখনও পাননি কৃষ্ণনগরের সদ্য প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া।
‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করে লোকসভার এথিক্স কমিটি। তারা ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট গত শুক্রবার লোকসভায় জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলির তরফেও লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে সময় চেয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি। ওই দিনই মহুয়াকে বহিষ্কার করা হয়।
মহুয়া যদিও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই ঘটনার শেষ দেখেই তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে থেকে লড়াই করার কথাও বলেন তিনি। লোকসভা থেকে বেরিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এমন একটা কারণের জন্য আমাকে বহিষ্কার করা হল, যা লোকসভার সকল সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনও উপহার নিয়েছি, তার কোনও প্রমাণ নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মোদী সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এ ভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।’’ তাঁর কাছে ইডি, সিবিআই পাঠানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মহুয়া।
শুক্রবার লোকসভায় মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলের সাংসদেরা। যদিও সেই সুযোগ পাননি তিনি। অনুরোধ রাখেননি স্পিকার। তিনি অতীতের দৃষ্টান্ত টেনে জানান, আগেও এই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত সদস্য কিছু বলার সুযোগ পাননি। পাশাপাশি বিজেপির যুক্তি ছিল, মহুয়া আগে নিজের কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তিনি সভাকক্ষ থেকে ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান। এই ঘটনায় মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছিলেন, ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এ সবের জন্য শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির থেকে উপহার নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই অভিযোগ করেছিলেন, সংসদে নিজের মেল আইডির লগইন, পাসওয়ার্ড হীরানন্দানিকে দিয়েছিলেন মহুয়া। সেখানে সরাসরি প্রশ্ন পাঠাতেন শিল্পপতি। মহুয়া ‘ঘুষ’ নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে সংসদে নিজের মেল আইডির লগইন, পাসওয়ার্ড দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, অনেক সাংসদই এ রকম করে থাকেন।