(বাঁ দিকে) একনাথ শিন্দে এবং কুণাল কামরা (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দেকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ। শিবসেনার কর্মী-সমর্থকদের রোষের মুখে পড়লেন কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা। মুম্বইয়ের যে হোটেলে কৌতুক অনুষ্ঠান করে কুণাল ওই ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করেছেন, সেটিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন উত্তেজিত শিবসৈনিকেরা। কুণালের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে।
শিবসেনার অভিযোগ, শিন্দের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই কাজ করেছেন কুণাল। তিনি ছাড়াও শিবসেনা (ইউবিটি) দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে, সঞ্জয় রাউত এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় নিরুপম সোমবার সকাল ১১টায় মারধর করার হুমকি দিয়েছেন। শিবসেনার সাংসদ নরেশ মাসকে হুমকির সুরে জানিয়েছেন, কুণাল যাতে দেশের কোথাও স্বাধীন ভাবে যাতাযাত করতে না-পারেন তা সুনিশ্চিত করবেন তাঁরা।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ‘নয়া ভারত’ নামের একটি অনুষ্ঠানে বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিদ্রুপাত্মক কিছু মন্তব্য করেন কুণাল। শিন্দের অবস্থান বদল নিয়েও কটাক্ষ করেন। কুণালেরই পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, একটি জনপ্রিয় হিন্দি গানের নকল করে শিন্দের অঙ্গভঙ্গি এবং শারীরিক গঠন বর্ণনা করছেন তিনি। এক জায়গায় শিন্দেকে ‘গদ্দার’ বলেও উল্লেখ করা হয়। যদিও সেখানে কোথাও কুণালকে শিন্দের নাম করতে শোনা যায়নি। (এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই কুণালের বিরুদ্ধে সরব হন শিন্দেসেনার কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে শিন্দের বিরুদ্ধে। অর্থের বিনিময়ে কুণাল এই কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। ওই কৌতুকশিল্পীর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেন শিবসেনা বিধায়ক মুরজি পটেল। তার পরেই শিবসেনার কয়েক জন কর্মী-সমর্থক পৌঁছে যান মুম্বইয়ের খার এলাকার ওই হোটেলে, যেখানে অনুষ্ঠানটি করেছিলেন কুণাল। অভিযোগ, হোটেলে ভাঙচুর করেন তাঁরা। চেয়ার ছুড়ে ফেলে দেন।
শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার নেতা-কর্মীদের এই আচরণের নিন্দা করেছে বিরোধী কংগ্রেস, উদ্ধবসেনা। কুণালের পাশে দাঁড়িয়েছেন আদিত্য ঠাকরে, সঞ্জয় রাউতেরা। আর যাঁকে ঘিরে এত বিতর্ক আর হইচই, সেই কুণাল হাতে সংবিধান ধরে নিজের একটি ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সঙ্গে লিখেছেন, ‘সামনে এগোনোর একমাত্র পথ’। এই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেই তিনি সমালোচকদের জবাব দিতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।