Haryana Assembly Election 2024

ক্ষুব্ধ শৈলজাকে ডাক বিজেপির, হরিয়ানা নিয়ে আশঙ্কায় কংগ্রেস

হরিয়ানায় বিজেপির দশ বছরের শাসনে ইতি টেনে এ বার ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। কিন্তু দলের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হরিয়ানা কংগ্রেস এখন আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৩১

—প্রতীকী চিত্র।

হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দু’সপ্তাহ বাকি। এ দিকে কংগ্রেসের ভোটের প্রচার থেকে উধাও রাজ্যের দলিত নেত্রী তথা সাংসদ কুমারী শৈলজা। কারণ তাঁর অনুগামীদের প্রার্থী করা হয়নি বলে শৈলজা ক্ষুব্ধ। এই সুযোগে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব উস্কে দিতে আজ বিজেপি নেতা মনোহরলাল খট্টর শৈলজাকে বিজেপিতে আহ্বান জানিয়েছেন। শৈলজা বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্নে খট্টরের জবাব, সমস্ত সম্ভাবনা খোলা রয়েছে।

Advertisement

হরিয়ানায় বিজেপির দশ বছরের শাসনে ইতি টেনে এ বার ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। কিন্তু দলের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হরিয়ানা কংগ্রেস এখন আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত। একদিকে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা ও তাঁর পুত্র তথা সাংসদ দীপেন্দ্র হুডা। অন্য দিকে কংগ্রেসের দলিত নেত্রী কুমারী শৈলজা ও রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। ভূপেন্দ্র ভোটে লড়ছেন। কিন্তু শৈলজা, সুরজেওয়ালা, দীপেন্দ্র সাংসদ বলে তাঁদের কাউকেই প্রার্থী করা হয়নি। অথচ শৈলজা খোলাখুলি জানিয়েছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে ইচ্ছুক। এ দিকে প্রার্থীতালিকা তৈরির পরে দেখা গিয়েছে, হরিয়ানার ৯০টি আসনের মধ্যে শৈলজা-সুরজেওয়ালা গোষ্ঠীর মাত্র ১৩ জন টিকিট পেয়েছেন। হুডা গোষ্ঠীর নেতারা শৈলজার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বাসনা নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। তার পরেই তিনি প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন।

শৈলজার এমন পদক্ষেপে কংগ্রেস হাইকমান্ডের রক্তচাপ বেড়েছে। কংগ্রেসের চিন্তা, এর আগে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই জেতা ম্যাচ হারতে হয়েছে। এ বার হরিয়ানায় বিজেপির বিরুদ্ধে জনমানসে ক্ষোভ সত্ত্বেও কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হবে? শৈলজা সিরসার সাংসদ। তিনি হরিয়ানার কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ দলিত মুখ। সাম্প্রতিক লোকসভা ভোটে হরিয়ানার দলিত ভোট বিজেপির দিক থেকে কংগ্রেসের দিকে সরে যায়। বিধানসভা ভোটেও কংগ্রেস যদি সেই ভোট ধরে রাখতে পারে, তা হলেই বাজিমাত করা যাবে বলে দলের আশা। রাজ্যের ২০-২১টি আসনে দলিত ভোটব্যাঙ্কে শৈলজার প্রভাব রয়েছে।

কংগ্রেসের দলিত ভোটে ভাঙন ধরাতে শনিবার খট্টর বলেছেন, ‘‘আমাদের দলিত বোন শৈলজাকে কংগ্রেস অপমান করছে। তিনি বাড়িতে বসে রয়েছেন। হুডা ও গান্ধী পরিবারের কোনও লজ্জা নেই! আমরা শৈলজাকে বিজেপিতে স্বাগত জানাতে তৈরি।’’ খট্টর হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রে মন্ত্রী করে এনেছেন। উদ্দেশ্য ছিল, রাজ্যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দূর করতে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদল। এখন চাপের মুখে ফের তাঁকে হরিয়ানার হাল ধরতে পাঠানো হয়েছে। বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও হরিয়ানায় প্রচারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কংগ্রেস মনে করছে, কংগ্রেসের দলিত ভোটে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই মায়াবতী হরিয়ানা যাচ্ছেন। মায়াবতী ইতিমধ্যেই তাঁর ভাইপো আকাশ আনন্দকে হরিয়ানায় পাঠিয়েছেন। আকাশ সেখানে গিয়ে বলেছেন, কংগ্রেস দলিত নেত্রী শৈলজার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। বিএসপি-ও শৈলজাকে দলে আহ্বান জানাচ্ছে বলে আকাশ জানিয়েছেন। আজ খোদ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে জানিয়েছেন, কংগ্রেস হাইকমান্ড হরিয়ানার পরিস্থিতির দিকেনজর রাখছে।

আরও পড়ুন
Advertisement