ব্যারিকেড ভেঙে এগোচ্ছে জনতার ঢল। ছবি: পিটিআই।
অতিরিক্ত ভিড়? অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা? না কি ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়াতেই বিপত্তি? মহাকুম্ভে কী ভাবে ঘটেছিল পদপিষ্টের সেই ঘটনা? জানাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
মঙ্গলবার গভীর রাতে মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ৩০ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৬০। প্রয়াগরাজের ডিআইজি বৈভব কৃষ্ণ বুধবার সন্ধ্যায় সরকারি ভাবে হতাহতের এই পরিসংখ্যান জানান। দুর্ঘটনার সময় মহাকুম্ভেই কর্তব্যরত ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রাহ্মমুহূর্তের আগে রাত ১টা থেকে ২টোর মধ্যে আখড়া মার্গে বহু মানুষের ঢল নেমেছিল। ফলে ভিড়ের চাপে ভেঙে যায় ব্যারিকেড। সে সময় অনেক পুণ্যার্থী সঙ্গমস্থলের আশপাশেই শুয়ে কিংবা বসে অপেক্ষা করছিলেন। ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়ায় তাঁদের মাড়িয়েই এগিয়ে যায় উন্মত্ত জনতা।’’ পদপিষ্টের ঘটনায় পরিবারের দুই সদস্যকে হারানো এক মহিলা সংবাদমাধ্যমকে জানাচ্ছেন, সে সময় অন্য ব্যারিকেডগুলি খুলে দিলে হয়তো এই দুর্ঘটনা ঘটত না! জৌনপুরের বাসিন্দা ওই মহিলা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুণ্যস্নান সারতে মহাকুম্ভে এসেছিলেন। কিন্তু একসঙ্গে ফেরা আর হল না!
অন্য প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নান’ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে মহাকুম্ভের মেলাপ্রাঙ্গণে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ভিড়ও। রাত ১২টার পর থেকেই ভিড়ের ছবিটা বদলাতে শুরু করে। রাত ২টো নাগাদ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। প্রশাসন ভেবেছিল, পুণ্যার্থীরা আসবেন, তার পর স্নান সেরে আবার ফিরে যাবেন। কিন্তু স্নানের পরেও বহু পুণ্যার্থী সঙ্গমস্থলের আশপাশেই ছিলেন। অনেকে আবার প্লাস্টিক পেতে মাটিতে শুয়েও ছিলেন। রাত ২টোর পর বহু পুণ্যার্থী ব্যারিকেড টপকে, ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন। অনেকে ব্যারিকেড টপকে হুড়মুড়িয়ে গিয়ে পড়েন ঘুমন্ত পুণ্যার্থীদের গায়ে। তার জেরেই দুর্ঘটনা।
দুর্ঘটনার পরেই বুধবার প্রয়াগরাজ, বারাণসী, অযোধ্যা, মির্জাপুর, জৌনপুর, চিত্রকূট, রায়বরেলী প্রভৃতি জেলার সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠকে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বৈঠকের পর বেশ কিছু নতুন নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে মেলাপ্রাঙ্গণে কোনও রকমের যানবাহন প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হবে না। ভিভিআইপি পাসও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, মেলা এলাকায় বাড়ানো হচ্ছে পুলিশি টহল।