(বাঁ দিকে) মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তির শর্তাবলি চূড়ান্ত! জয়পুরের এক অনুষ্ঠান থেকে এমনই জানালেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। সোমবারই তিন দিনের সফরে সপরিবার ভারতে এসেছেন তিনি। রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে নৈশভোজ এবং বৈঠকও করেন ভান্স। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেও ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার জয়পুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভান্স এই বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাণিজ্যচুক্তি শর্তাবলির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাবনার বাস্তবায়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’ শুধু তা-ই নয়, মোদীর সঙ্গে দর কষাকষি করা ‘কঠিন’ (টাফ নেগোশিয়েটর) বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। মোদীকে আমেরিকার সম্মানের নেপথ্যে এটিই প্রধান কারণ বলেও বর্ণনা করেন তিনি।
তাঁর মতে, আমেরিকা ভারতে প্রচার করতে নয়, বরং অংশীদার হতেই এসেছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘অতীতে ওয়াশিংটন প্রায়শই প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে প্রচারের মনোভাব নিয়ে যোগাযোগ করত। আমেরিকার পূর্ববর্তী প্রশাসনগুলি ভারতকে কম খরচে শ্রমের উৎস হিসাবে দেখত। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে।’’
গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফরের সময়ে দুই দেশের বাণিজ্যচুক্তির বার্তা দিয়েছিলেন ভান্স এবং ট্রাম্প। তবে তার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর বাড়তি আমদানি শুল্ক ধার্য করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছে ভারতও। ভারতীয় পণ্যের উপর বাড়তি ২৬ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করা হয়। যদিও পরে বাড়তি শুল্ক কার্যকর স্থগিত রাখা হয়েছে। সেই আবহে ভান্স ভারতে এসেছেন।
২০৩০ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে চুক্তি করতে চায় নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন। এখন যার অঙ্ক প্রায় ১৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার। নতুন বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে দুই দেশের প্রশাসনের মধ্যে। ভান্স জানান, সেই চুক্তিরই রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে।
সোমবার সকালে তিন দিনের সফরে ভারতে পৌঁছোন ভান্স। সকাল ১০টার কিছু আগে দিল্লির পালাম বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে তাঁর বিমান। ভান্সের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী উষা ভান্স এবং তিন শিশুসন্তান— ইওয়ান, বিবেক ও মিরাবেল। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের সরকারি বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ও স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে গিয়েছিলেন ভান্স। বাণিজ্যচুক্তির পাশাপাশি জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, কৌশলগত প্রযুক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেও মোদী-ভান্স বৈঠকের পরে বিবৃতিতে জানানো হয়। তার পরই মঙ্গলবার ভান্স বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করলেন।