Train accident

কেউ হারিয়েছেন পা, কেউ খুইয়েছেন হাত! ভবিষ্যতের চিন্তায় করমণ্ডলকাণ্ডের আহত পরিযায়ী শ্রমিকেরা

এই শ্রমিকেরা কাজের সন্ধানেই দক্ষিণের তিন রাজ্য কেরল, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুর উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। রেল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার দিন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে মূলত চার রাজ্যের শ্রমিকেরা ছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ভুবনেশ্বর শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৩ ১১:৩৯
Injured migrant workers face uncertain future after Balasore train accident

বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।

ট্রেন দুর্ঘটনায় বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে গেলেও কারও হাত কেটে বাদ দিতে হয়েছে, কারও আবার পায়ে ঢুকেছে লোহার রড। এই অবস্থায় পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য হিসাবে কী ভাবে স্ত্রী, ছেলেমেয়েদের মুখে অন্ন তুলে দেবেন, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। এই শ্রমিকেরা গত ২ মে চেন্নাইমুখী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের অসংরক্ষিত কামরার যাত্রী ছিলেন। মূলত পেশায় রাজমিস্ত্রি এই শ্রমিকেরা কাজের সন্ধানেই দক্ষিণের তিন রাজ্য কেরল, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুর উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। রেল সূত্রে খবর, গত ২ জুন, ট্রেন দুর্ঘটনার দিন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।

বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সি প্রকাশ রাম সে দিন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। দুর্ঘটনার পর ভুবনেশ্বরের এসসিবি হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর তিনি জানতে পারেন, তাঁর জখম হওয়া ডান পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়েই রাম বলছিলেন, “আমি জানি না, আমার কপালে কী লেখা আছে। আমি বাড়ির একমাত্র উপাজর্নকারী সদস্য। বসে গেলে খাব কী? আর খোঁড়া মানুষকে কে কাজ দেবে?” মুর্শিদাবাদের রেজাউল বাফাদারের ভাগ্য অবশ্য রামের তুলনায় ভাল। দুর্ঘটনায় ডান হাত ভেঙে গিয়েছে তাঁর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আগামী এক বছর ওই হাতে ভারী কিছু তোলা যাবে না। রেজাউলের আশা, কিছু মাস পরে তিনি আবার ভিন্‌রাজ্যে গিয়ে কাজ করতে পারবেন।

Advertisement

অসমের বাসিন্দা সৃষ্টিধর সবকের হাতে অস্ত্রোপচার করে লোহার রড ঢোকানো হয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই তিনি বলছিলেন, “বাড়িতে ৩ বছরের সন্তান রয়েছে। অসুস্থ মা। দিনে ৫০০ টাকার কাজ পাই বলেই তো পরিবার ছেড়ে দূরের রাজ্যে কাজে যাই। জানি না আর কাজ পাব কি না।” আহত পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রায় সকলেরই বক্তব্য, নিহতদের জন্য বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হলেও, আহতদের জন্য যে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্ত কম।

২ মে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওড়িশায় বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজার স্টেশনে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। এই ৩ ট্রেনের দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১২০০ জনেরও বেশি।

আরও পড়ুন
Advertisement