লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা (বাঁ দিকে) এবং রাজ্যসভার অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড়। — ফাইল চিত্র।
শুধু সোমবারেই ৭৮ জন। চলতি শীতকালীন অধিবেশনে মোট ৯২! নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় তো বটেই, ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসেও এমন ঘটনা ‘নজিরবিহীন’ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন।
গত বুধবার লোকসভায় রংবোমা হানার ঘটনার পর থেকেই সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অধিবেশনে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতির দাবিতে ওয়েলে নেমে স্লোগান তুলছেন তাঁরা। সোমবার সেই অপরাধে শীতকালীন অধিবেশেনের বাকি দিনগুলির জন্য সাসপেন্ড করা হল লোকসভা এবং রাজ্যসভার মোট ৭৮ জন বিরোধী সাংসদকে।
গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ সামাল দিতে না-পেরে রাজ্যসভার অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড় শীতকালীন অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য সাসপেন্ড করেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। লোকসভায় সাসপেন্ড করা হয় ১৪ বিরোধী সাংসদকে। পরে দেখা যায় তাঁদের মধ্যে এক জন সভাতে হাজির না থাকে সত্ত্বেও শাস্তির কবলে পড়েছেন! এর পর শুক্রবারও বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদের জেরে সোমবার পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে গিয়েছিল দুই কক্ষের অধিবেশন।
সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের তালিকায় রয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। রয়েছেন, বাংলার অনেক তৃণমূল সাংসদও। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল, শতাব্দী রায়কে সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা। এ ছাড়া এই তালিকায় রয়েছেন ডিএমকের তিন সাংসদ টিআর বালু, এ রাজা এবং দয়ানিধি মারান।
অধীর সোমবার বলেন, ‘‘বিজেপির সংখ্যাধিক্য রয়েছে। তাই দিয়ে সংসদে পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। সংসদকে বিজেপি ও আরএসএসের কার্যালয়ে পরিণত করতে চাইছে।’’ লোকসভায় কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, ‘‘সংসদের নিরাপত্তা যে ভাবে ভেঙে পড়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়েছিল। তাঁরা বাইরে অনেক কথা বললেও সংসদে কিছু বলছেন না। সেই প্রশ্ন তুললেই বিরোধীদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে।’’ আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের বর্তমান শীতকালীন অধিবেশন চলার কথা। বর্তমান পরিস্থিতিতে মোদী সরকার কার্যত বিরোধীশূন্য সংসদের অধিবেশন চালিয়ে যাবেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।