Arvind Kejriwal's Jail Schedule

তিহাড় জেলে প্রথম রাতে ঘুম এল না, পায়চারি করে কাটালেন কেজরী! সকাল শুরু চা এবং ধ্যানে

পিটিআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার খুব সকালে প্রাতরাশ দেওয়া হয় কেজরীওয়ালকে। চা এবং বিস্কুট খেতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সূত্রের খবর, প্রাতরাশের আগে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধ্যান করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২৮
দিল্লির মুুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।

দিল্লির মুুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র ।

দিল্লির আবগারি মামলায় অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। সোমবার বিকেলে কেজরী তিহাড়ে প্রবেশ করেছেন। তিহাড়ের জেলে দু’নম্বর সেলে ঠাঁই হয়েছে তাঁর। তবে জেল সূত্রে খবর, তিহাড়ে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। সকাল কেটেছে ধ্যান এবং যোগব্যায়াম করে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিহাড়ের প্রথম রাত ভাল কাটেনি কেজরীর। কিছু ক্ষণ মাত্র ঘুমোতে পেরেছেন তিনি। কেজরীকে সোমবার বিকেলে তিহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁর শরীরে শর্করার মাত্রা ৫০-এর নীচে নেমে গিয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে ওষুধ দেওয়া হয়। এর পর বিকেলে চা এবং রাতে বাড়ির তৈরি খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল আপ প্রধানকে। সূত্রের খবর, তিহাড়ের কক্ষে কেজরীওয়ালকে একটি গদি, একটি কম্বল এবং দু’টি বালিশ দেওয়া হয়েছে। তবে সোমবার রাতে কিছু ক্ষণ মাত্র সিমেন্টের বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়েছিলেন কেজরী। গভীর রাতে তাঁকে কক্ষের মধ্যে পায়চারি দেখা যায় বলে পিটিআইকে জানিয়েছে জেল সূত্র।

পিটিআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার খুব সকালে প্রাতরাশ দেওয়া হয় কেজরীওয়ালকে। চা এবং বিস্কুট খেতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সূত্রের খবর, প্রাতরাশের আগে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধ্যান করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বেশি কিছু ক্ষণ যোগব্যায়ামও করেন। এর পর দুপুর ১২ টা নাগাদ তাঁকে বাড়িতে তৈরি খাবার পরিবেশন করা হয়।

জেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালেও কেজরীর ‘সুগার টেস্ট’ করানো হয়েছে। তখনও তাঁর শরীরে শর্করার মাত্রা কম ছিল। জেলের চিকিৎসকদের নজরদারিতে রয়েছেন তিনি। তাঁকে দুপুরে এবং রাতে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর শরীরে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন তাঁকে বাড়ির খাবার পরিবেশন করা হবে। সূত্রের খবর, বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ কেজরীওয়ালকে নৈশভোজ দেওয়া হবে। এর পর ৭টার মধ্যে তাঁকে আবার ফিরে যেতে হবে কারাগারের কক্ষে। অন্য কয়েদিদের মতো তিনিও সকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টিভি দেখতে পারেন। মঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী এবং সন্তান তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলেও জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কারাগার সূত্রে আরও খবর, তিহাড়ে কেজরীওয়ালের কক্ষের বাইরে দু’জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও তাঁর উপর নজর রাখছেন কারা কর্তৃপক্ষ।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কেজরীওয়ালের পাশের সেলে রয়েছেন তাঁর মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য মণীশ সিসৌদিয়া। আবগারি মামলাতেই মণীশকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ ছাড়াও দিল্লির প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন রয়েছেন সাত নম্বর সেলে। পাঁচ নম্বর সেলে আছেন আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। অন্য দিকে, ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) নেত্রী তথা তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-এর কন্যা কে কবিতার জন্য বরাদ্দ তিহাড়ের মহিলা বিভাগের ছ’নম্বর সেল।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরীকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এর আগে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেজরীকে ন’বার সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রতি বারই হাজিরা এড়িয়েছেন। গত ২১ মার্চ ছিল নবম বারের হাজিরার দিন। ইডি দফতরে না গিয়ে কেজরী সে দিন গিয়েছিলেন হাই কোর্টে। রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। তার পর ওই দিন রাতেই দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতই ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কেজরীওয়ালকে।

এক দশকেরও বেশি সময় পর তিহাড় জেলে ঢুকতে হয়েছে আপ প্রধানকে। ২০১১ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় অণ্ণা হাজারের সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিছু সময় তিহাড়ে কেটেছিল তাঁর।

আরও পড়ুন
Advertisement