(বাঁ দিকে) দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং একনাথ শিন্ডে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ফলপ্রকাশের পর ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয় মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হতে চলেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছিল একনাথ শিন্ডের শিবসেনা। সেই বৈঠকের নির্যাস জানা না-গেলেও শিবসেনা সূত্রে খবর, দলের বিধায়কেরা শিন্ডেকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করার বিষয়ে সওয়াল করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের যুক্তি শিন্ডের নেতৃত্বেই মহারাষ্ট্রে বড় সাফল্য পেয়েছে ‘মহাজুটি’ জোট। তাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা না-হলে ভোটারদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে।
বিজেপিও বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে বলেই খবর। একমাত্র এনসিপি (অজিত পওয়ার)-ই মুখ্যমন্ত্রিত্বের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। পরিষদীয় দলের বৈঠকে এনসিপি বিধায়কেরা অজিতকে নেতা হিসাবে বেছে নেন। তবে বিদায়ী মন্ত্রিসভার উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেই, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়ে দলের প্রবীণ নেতা ছগন ভুজবল বলেন, “যদি বিজেপি দেবেন্দ্র ফডণবীসকে মুখ্যমন্ত্রী করে, তবে আমরা সমর্থন করব। এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।”
২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপি একাই ১৩২টি আসনে জয়ী হয়েছে। অন্য দিকে, মহাজুটির অন্য দুই শরিক শিবসেনা (শিন্ডে) ৫৭টি এবং এনসিপি (অজিত) ৪১টি আসনে জয়ী হয়েছে। আসনসংখ্যার নিরিখে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটে এটাই বিজেপির সর্বোত্তম ফল। একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন থেকে মাত্র ১৩ আসন দূরে রয়েছে তারা। বিজেপি সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে দেবেন্দ্রকেই মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুলেছেন বিধায়কদের বড় অংশ। আরএসএস-এর সমর্থনও নাকি নাগপুরের এই ব্রাহ্মণ নেতার পক্ষে যাচ্ছে। যদিও ‘জোটধর্মের’ নীতি মেনে এখনই এই বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করতে চাইছে না বিজেপি। মহারাষ্ট্রের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং সংসদীয় বোর্ড স্থির করবে। শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
‘মহাজুটি’ সূত্রে খবর, প্রকাশ্যে ‘চুপচাপ’ থাকলেও বিজেপি এবং শিন্ডেসেনার মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে দুই পক্ষের মধ্যে এখনও ঐকমত্য তৈরি হয়নি বলেই সূত্রের খবর। তবে ভোটপ্রচারে ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’ স্লোগান তোলা বিজেপি শাসকজোটের ‘বড়দা’ হিসাবে ‘দাদাগিরির’ বার্তা দিতে চাইছে না বিজেপি। সে ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিতেও আপত্তি নেই তাদের। যদিও সাংবিধানিক নিয়মানুসারে আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে মহারাষ্ট্রে নতুন বিধানসভা গঠন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ‘মহাজুটি’ জোটকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়ে শিন্ডেকেই তদারকি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন রাজ্যপাল।