অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির মতকে হাতিয়ার করে শীর্ষ আদালতের সঙ্গে সংঘাতে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।
বিচারবিভাগের সঙ্গে কেন্দ্রের শাসকদলের সংঘাত নতুন মোড় নিল রবিবার। সুপ্রিম কোর্টকে আক্রমণ করতে এ বার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির মন্তব্যকে হাতিয়ার করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তাঁর বক্তব্য, “জনগণ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। জনপ্রতিনিধিরাও জনগণের স্বার্থে কাজ করেন।” একই সঙ্গে তিনি জানান, বিচারবিভাগ নিরপেক্ষ এবং সংবিধান সব কিছুর উপরে। অবসরপ্রাপ্ত ওই বিচারপতি নানা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কড়া সমালোচনা করলেও মন্ত্রীর সেই মন্তব্যকে যে কোনও সুস্থ মানুষের প্রতিক্রিয়া বলে স্বাগত জানিয়েছেন রিজিজু।
সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরএস সোধি একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে সংবিধানকে কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ তোলেন। বর্তমান কলেজিয়াম ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করে তিনি সরকারের সুরেই এই ব্যবস্থায় সংস্কার আনার দাবি তোলেন।
বিচারপতির এই বক্তব্যকে সমর্থন করে নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ভিডিয়োটি পোস্ট করেন আইনমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি লেখেন, “এটাই ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।” একই সঙ্গে তিনি জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই ধরনের সুস্থ চিন্তাভাবনারই শরিক হন। আর যাঁরা জনাদেশকে মানেন না, তাঁরা আসলে নিজেদের সংবিধানের ঊর্ধ্বে দেখতে পছন্দ করেন।” সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং প্রবীণ চার বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কলেজিয়াম ব্যবস্থায় সরকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চেয়ে এর আগে দেশের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়কে চিঠি দিয়েছিলেন রিজিজু। তা ছাড়াও সরকারের বড়, মেজ আধিকারিকরা, এমনকি উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও সংবিধান রক্ষায় সুপ্রিম কোর্টের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় অবশ্য বরাবরই কলেজিয়াম ব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করেছেন। গত শনিবারও এক অনুষ্ঠানে তিনি সংবিধানের ‘মূল কাঠামো’কে ধ্রুবতারা বলে উল্লেখ করেছেন। বিরোধী দলগুলিও অভিযোগের সুরে জানিয়েছে, সরকার বিচারবিভাগকে দখল করতে চাইছে। এ সবের প্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রীর নয়া টুইটে বিচার বিভাগ এবং শাসকদল বিজেপির মধ্যে সংঘাত আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।