প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মণের সঙ্গে প্রসূন কিশোর (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম বার লড়তে নেমেই ‘অভাবনীয়’ সাফল্য পেয়েছে তিপ্রা মথা। মূলত জনজাতিদের অধিকার রক্ষার দাবি নিয়ে ভোট ময়দানে নামা এই দলই এখন সংখ্যার বিচারে ত্রিপুরার দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। এই দলের প্রধান হচ্ছেন ত্রিপুরা রাজপরিবারের সদস্য প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মণ। ভোটে না লড়়েই ত্রিপুরার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠেছেন তিনি। প্রদ্যোৎ এবং তাঁর দলের সাফল্যের নেপথ্যে এমন এক জনের নাম উঠে আসছে, যিনি আবার ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের প্রাক্তন সঙ্গী। তিনিও আর এক কিশোর— প্রসূন কিশোর।
প্রসূন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক। কিন্তু প্রথাগত জীবিকা অর্জনের পথে না গিয়ে তিনি প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ‘আইপ্যাকে’ যোগ দেন। ভোটকুশলী হিসাবে কাজ শুরু করেন নিজের জন্মভূমি বিহারেই। তার পর প্রশান্তের সংস্থা ২০১৯ সালে তাঁকে অন্ধ্রপ্রদেশে পাঠায়। সেখানে ওয়াইএসআর কংগ্রেস নেতা জগনমোহন রেড্ডির ভোটপ্রচারের কৌশল তৈরির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বিহারে প্রশান্তের অফিসেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের প্রচার কৌশলে তৈরির নেপথ্যেও ছিলেন প্রসূন। তার পর অবশ্য স্বাধীন ভাবে কাজ করবেন বলে ‘আইপ্যাক’ ছেড়ে দেন তিনি।
আপাতত স্বাধীন ভোটকুশলী হিসাবেই কাজ করে যাচ্ছেন প্রসূন। নিজস্ব কোনও সংস্থা বা টিম তাঁর নেই। ব্যক্তিগত উদ্যোগেই প্রসূনকে নিজের পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করেন প্রদ্যোত কিশোর। প্রদ্যোতের বড় পোস্টারে ত্রিপুরার নানা প্রান্তকে ঢেকে দেওয়া, গান বাজিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করা— এ সবই প্রসূনের মস্তিষ্কপ্রসূত। উপজাতিরা যে ত্রিপুরার রাজপরিবারকে এখনও সম্মানের চোখে দেখে, সে কথা মাথায় রেখেই প্রদ্যোতের ‘মহারাজা’ ভাবমূর্তিকে সুকৌশলে তুলে ধরেন তিনি। ২০২২ সালে স্থানীয় নির্বাচনে তিপ্রা মথার সাফল্যেও অনেকে প্রসূনের অবদানকে স্বীকার করে থাকেন। বিধানসভা নির্বাচনে তিপ্রা মথার সাফল্যের পর প্রচারবিমুখ প্রসূন বলছেন, “আমার উপর বিশ্বাস রাখার জন্য মহারাজা প্রদ্যোতের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”