Opposition Unity

কলকাতায় প্রথম ঘোষণা, যৌথ বিবৃতিতে দু’বার বদল! কী ভাবে সংসদ ভবনের অনুষ্ঠান বয়কট ১৯টি দলের

নানা রাজ্যে স্থানীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতাও বিরোধীদের সার্বিক জোটগঠনের পক্ষে অন্তরায়। কিন্তু রবিবার সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটে নজিরবিহীন ভাবে একসঙ্গে এসেছে বিরোধী দলগুলি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৩ ১০:২২
How 19 parties came on board for joint statement on boycotting inauguration of new parliament building

কী ভাবে সংসদ ভবনের অনুষ্ঠান বয়কট ১৯টি দলের? —ফাইল চিত্র।

নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করেছে দেশের ১৯টি বিরোধী দল। লোকসভা ভোটের আগে এই অভূতপূর্ব বিরোধী ‘ঐক্য’ চিন্তায় ফেলেছে শাসক বিজেপিকেও। বৃহস্পতিবারই দেশের মাটিতে পা রেখে এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলগুলিকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সংসদ ভবনের উদ্বোধনের মাধ্যমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে ঐক্যের ছবিটা তুলে ধরতে চেয়েছিল, তা বড়সড় ধাক্কা খেল বলেই মনে করা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী জোট গঠনের তোড়জোড় শুরু হলেও নানা কারণে বিজেপি বিরোধী সব দলকে আলোচনার টেবিলে এখনও অবধি বসানো যায়নি। নানা রাজ্যে স্থানীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতাও বিরোধীদের সার্বিক জোটগঠনের পক্ষে বড় অন্তরায়। কিন্তু রবিবার সংসদ ভবনের উদ্বোধন বয়কটে নজিরবিহীন ভাবে একসঙ্গে এসেছে বিরোধী দলগুলি।

সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা যোগ দেবে না— মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ কথা জানিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। ওই দিনই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন আপের দুই মুখ্যমন্ত্রী, দিল্লির অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং পঞ্জাবের ভগবন্ত মান। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই রবিবারের অনুষ্ঠান বয়কট নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনা হয় কেজরীওয়াল এবং মমতার। সন্ধ্যায় নিজেদের অবস্থান জানায় তৃণমূল। পরের দিন, বুধবার মুম্বইয়ে নেমেই কেজরীওয়াল জানিয়ে দেন, তৃণমূলের মতো তাঁরাও ওই অনুষ্ঠান বয়কট করছেন।

Advertisement

অন্য দিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণপত্র পেয়েই কংগ্রেসের তরফে ‘সমমনস্ক’ দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু হয়। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে থাকা ডিএমকে, এনসিপি, জেএমএম, আরজেডি, জেডি(ইউ), শিবসেনা (উদ্ধব) অনুষ্ঠান বয়কট করার পক্ষেই মত দেয়। সেই মোতাবেক বয়কট করার কথা জানিয়ে যৌথ বিবৃতির খসড়া তৈরি করে রাখেন দলের এক প্রবীণ নেতা। কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রাথমিক খসড়ায় আপ, তৃণমূলের মতো বেশ কিছু দলের নাম ছিল না। কারণ বিভিন্ন বিষয়ে আপ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে নিজেদের ‘দূরত্ব’ বজায় রেখেছে। তবে তৃণমূলের প্রতি কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব নরম হলেও, আপকে সঙ্গে নেওয়ার ক্ষেত্রে দলের অন্দরেই নানা মত রয়েছে। তবে সম্প্রতি অর্ডিন্যান্স বিতর্কে ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ কেজরীওয়ালের পাশে দাঁড়ানোর কথাও ভাবছে কংগ্রেস। ওই স্বার্থের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেসের তরফেও কোনও অনমনীয়তা দেখানো হয়নি। খসড়া তালিকায় দু’বার বদল ঘটিয়েছে তারা। শেষমেশ বুধবার সকালে যখন বিরোধীদের যৌথ বিবৃতি প্রকাশ হয়, তখন দেখা যায় তাতে রয়েছে ১৯টি দলের নাম, এমনকি আপ, এসপি, তৃণমূলের নামও।

যৌথ বিবৃতিতে নাম না থাকলেও আলাদা করে অনুষ্ঠান বয়কটের কথা জানিয়েছে আসাউদ্দিন ওয়াইসির দল। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, শিরোমণি অকালি দল। তবে এগুলি বিজেপি বিরোধী দল হলেও তাদের বিরোধিতার ‘ইচ্ছা’ নিয়ে বহু বার প্রশ্ন তুলেছে অন্য বিরোধী দলগুলি। যৌথ বিবৃতিতে দলগুলি জানিয়েছে, সংসদ থেকে গণতন্ত্রের আত্মাকে শুষে নেওয়া হয়েছে। তাই নতুন ভবনের কোনও অর্থ তাদের কাছে নেই। কিন্তু এটুকু বাদ দিলেও যে ভাবে ১৯টি দল এক বিবৃতিতে পর পর স্থান করে নিয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন
Advertisement