Himachal Pradesh Disaster

হিমাচল, উত্তরাখণ্ডে মৃত বেড়ে ৫৪, দুর্যোগে ম্লান স্বাধীনতা দিবস, ‘অকল্পনীয় সঙ্কট’, বললেন মোদী

হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডের দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ হয়েছে। রবিবার থেকে তুমুল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রাজ্যদু’টি। উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজ অন্তত ১০ জন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শিমলা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৩ ১০:২৬
Himachal Pradesh disaster causes muted Independence day celebration as PM Modi expresses concern.

হিমাচল প্রদেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।

হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের দুর্যোগ নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের সকালে লাল কেল্লা থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাহাড়ি রাজ্যগুলির পরিস্থিতিকে তিনি ‘অকল্পনীয় সঙ্কট’ বলে উল্লেখ করেছেন। যাঁরা এই দুর্যোগে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে সমবেদনাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ হয়েছে। রবিবার থেকে শুরু হওয়া তুমুল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল। শুধু ওই রাজ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। এ ছাড়া, উত্তরাখণ্ডেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় তিন জনের প্রাণ কেড়েছে। নিখোঁজ অন্তত ১০ জন।

এই পরিস্থিতিতে দুর্যোগ কবলিত রাজ্যে স্বাধীনতা দিবসের উদ্‌যাপন ম্লান হয়ে গিয়েছে। হিমাচলের প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজ্যের কোথাও কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না। যে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর মানালিতে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তিনি সেই পরিকল্পানা বাতিল করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী শিমলাতেই স্বাধীনতা দিবস পালন করবেন। কেবল পতাকা উত্তোলন, প্যারেড এবং সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ থাকবে সেই উদ্‌যাপন।

লাল কেল্লার বক্তৃতায় হিমাচল, উত্তরাখণ্ড-সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত রাজ্যগুলির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেশের অনেক রাজ্যে ‘অকল্পনীয় সঙ্কট’ ডেকে এনেছে। যাঁরা এই সঙ্কটে নিজের পরিবার, প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার মিলেমিশে কাজ করে আমরা এই সঙ্কট থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসব। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’’

রবিবার রাত থেকে প্রকৃতির ‘তাণ্ডব’ শুরু হয়েছে হিমাচলে। গত দু’দিন ধরেই সেখানে ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। রবিবার রাতে সোলান জেলার একটি গ্রামে আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। তার ফলে হড়পা বানে ভেসে যায় গ্রামের একাংশ। একই পরিবারের সাত জনের মৃত্যু হয় সেই ঘটনায়। মোট মৃতের সংখ্যা ১১। হড়পা বানের পর ওই গ্রাম থেকে ছ’জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে। এর পর সোমবার সকালেই আরও এক বিপর্যয় নেমে আসে হিমাচলের বুকে। সে দিন শ্রাবণ মাসের সোমবার উপলক্ষে শিবের আরাধনার জন্য মন্দিরে জড়ো হয়েছিলেন অনেকে। প্রবল বৃষ্টির কারণে আচমকা মন্দিরটি ভেঙে পড়ে। চাপা পড়ে মৃত্যু হয় অন্তত ১৫ জনের। রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী শিব মন্দিরে উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। তবে এখনও মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের নীচে কিছু দেহ চাপা পড়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃষ্টিতে বার বার বিঘ্নিত হচ্ছে উদ্ধারকাজ।

বৃষ্টির কারণে হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডের দিকে দিকে ভূমিধসের কারণে ব্যাহত হয়েছে জনজীবন। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, জাতীয় সড়ক ধসের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিপাশা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ফুঁসে উঠেছে অন্য নদীগুলিও। উত্তরাখণ্ডে চারধাম যাত্রা খারাপ আবহাওয়ার কারণে স্থগিত হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে রাজ্যবাসীকে বাড়ির বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

হিমাচলের রাজধানী শিমলার বিস্তীর্ণ অংশে রবিবার থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত। দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। স্কুল, কলেজ বন্ধ গোটা রাজ্যে। চাষেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, হিমাচল প্রদেশের ১২টি জেলার মধ্যে ন’টি জেলাতেই অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি চলবে ১৭ অগস্ট পর্যন্ত। দেহরাদূন, তেহ্‌রি, নৈনিতাল-সহ উত্তরাখণ্ডের ছয় জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement