Gujarat Assembly Election 2022

গুজরাতে দ্বিতীয় বার বিধানসভায় লড়তে নেমেই চমক দিল আপ, মূল্য চোকাল কংগ্রেস

২০১৭তে গুজরাতের ২৯টি বিধানসভা আসনে লড়েছিল আপ। সব ক’টিতেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। ভোট পেয়েছিল সাকুল্যে ২৯,৫০৯টি (০.১ শতাংশ)। ভোট বেড়েছে ১২%-রও বেশি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
গান্ধীনগর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৫০
গুজরাতে কংগ্রেসকে ‘ঝাড়ু মারল’ অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি।

গুজরাতে কংগ্রেসকে ‘ঝাড়ু মারল’ অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের রাজ্যে দ্বিতীয় বার বিধানসভা ভোটে লড়তে নেমেই চমকে দিলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ভোটগণনার প্রবণতা বলছে, ৫টিরও বেশি আসনে জিতে প্রথম বার গুজরাত বিধানসভায় খাতা খুলতে চলেছে আম আদমি পার্টি (আপ)। পেতে চলেছে ১২ শতাংশেরও বেশি ভোট।

২০১৭ সালে গুজরাতের বিধানসভা ভোটে ২৯টি আসনে লড়েছিল আপ। সব ক’টিতেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। ভোট পেয়েছিল সাকুল্যে ২৯,৫০৯টি (০.১ শতাংশ)। পাটিগণিতের হিসাব বলছে, এ বার কেজরীর দলের ভোট বেড়েছে ১২ শতাংশেরও বেশি। দিল্লি এবং পঞ্জাব বিধানসভায় জয়ের পরে গুজরাতে এই ভোটপ্রাপ্তি আপকে জাতীয় দলের মর্যাদা পেতে সাহায্য করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভোটের ফলাফলের আঁচ পেয়েই আপ নেতা তথা দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এ বার আমরা জাতীয় দলের মর্যাদা পেলাম।’’

Advertisement
দল
প্রাপ্ত আসন
সরকারে দরকার৯২
মোট আসন১৮২
বিজেপি ১৫৬
কংগ্রেস ১৭
আপ
অন্যান্য

সৌরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ গুজরাতের পাশাপাশি, আমদাবাদ-গান্ধীনগরের একাধিক আসনেও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন আপ প্রার্থী। নর্মদা, গির-সোমনাথ, সুরেন্দ্রনগর, তাপি, অমরেলী, আরাবল্লি, পোরবন্দর, দাহোদ, দ্বারকার মতো জেলায় উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছেন আপ প্রার্থীরা।

আম আদমি সমর্থকেরা গুজরাতে ভোটের ফলে খুশি।

আম আদমি সমর্থকেরা গুজরাতে ভোটের ফলে খুশি। ছবি: পিটিআই।

ভোট-পণ্ডিতদের একাংশ বলছেন, আপের এই চমকপ্রদ উত্থানের কারণেই গুজরাতের বিধানসভায় সর্বকালীন রেকর্ড আসনে জয়ের ইতিহাস তৈরি করল বিজেপি। মুখ থুবড়ে পড়ল কংগ্রেস। লোকসভার মতোই গুজরাত বিধানসভাতেও ‘বিরোধী দলের মর্যাদা’ খোয়ানোর মুখে এসে দাঁড়িয়েছে মল্লিকার্জুন খড়্গে-রাহুল গান্ধীর দল।

২০১৭-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ওই রাজ্যে ৪৪ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছিল। এ বার তা নেমে এসেছে ২৬ শতাংশের কাছে। অন্য দিকে, বিজেপির ভোট ৪৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৩ শতাংশ পেরোতে চলেছে। ভোটের ফলে স্পষ্ট, বিজেপি বিরোধী পাটীদার ভোটের পাশাপাশি সরাসরি কংগ্রেসের অনগ্রসর ও দলিত ভোটে থাবা বসিয়েছে আপ। ভোটের পাটিগণিত বলছে, বহু আসনেই আপ এবং কংগ্রেসের ভোট কাটাকাটিতে জিতে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।

পদ্মের রাজ্যে ঝাড়ুর প্রথম চমকটা এসেছিল ২০২১ সালের পুরভোটে। দক্ষিণ গুজরাতের সুরাতে কংগ্রেসকে ‘শূন্যে’ ঠেলে দিয়ে ২৭টি ওয়ার্ড জিতে বিরোধী দল হয়েছিল আম আদমি পার্টি (আপ)। পেয়েছিল প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্যে বিজেপির ‘সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসাবে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। গুজরাতে ‘যাতায়াতও’ বেড়ে যায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর।

অক্টোবর মাস থেকেই ‘পঞ্জাব মডেল’ অনুসরণ করে ভোটের ময়দানে নেমেছিল কেজরীওয়ালের দল। ইমেল এবং মোবাইলে কলের মাধ্যমে গুজরাতের আম ভোটারদের থেকে ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে পছন্দের নাম সংগ্রহের পালা শুরু হয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে পঞ্জাব ভোটের আগে একই কৌশলে সরাসরি ‘জনতার দরবার’ থেকে ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসেবে মানকে বেছে নিয়েছিলেন কেজরীওয়াল। আর অকালি দল বনাম কংগ্রেসের কয়েক দশকের মেরুকরণ ভেঙে বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে সে রাজ্যে সরকার গড়েছে আপ। ঘটনাচক্রে, সে সময়ই গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পদে নামী আইনজীবী অমিত পালেকরের নামও ঘোষণা করেছিলেন কেজরী। যদিও তাতে সাফল্য আসেনি।

তবে আংশিক সাফল্য এল গুজরাতে। আম ভোটদাতাদের মতামতের ভিত্তিতে সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক ইসুদান গঢ়বী এবং গুজরাত শাখার সভাপতি গোপাল ইতিলিয়ার মধ্যে ‘পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে প্রথম জনকে বেছেছিলেন কেজরী। জনপ্রিয় টিভি সঞ্চালক ইসুদান পোরবন্দরের খম্বালিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপিকে কড়া টক্কর দিচ্ছেন। অন্য দিকে, একদা পাটীদার সংরক্ষণ আন্দোলনে হার্দিকের সহযোগী গোপাল, সুরাতের কাটারগাম আসনে হারের মুখে চলে এলেও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement