গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী— তিন নদীর সঙ্গমস্থলে মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নান’ করতে বিপুল সংখ্যায় পুণ্যার্থীদের ভিড় হবে, এমন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহাকুম্ভে ‘শাহি স্নান’কে কেন্দ্র করে ভিড় করতে শুরু করেন পুণ্যার্থীরা। সন্ধ্যা যত গড়ায়, ভিড় ততই বাড়তে থাকে। দেশ-বিদেশ থেকে বহু পুণ্যার্থী কুম্ভে এসেছেন। তাঁরা সবাই সঙ্গমে আসতে শুরু করেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে ত্রিবেণী সঙ্গম থেকে এক কিলোমিটার দূরে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করেছিল প্রশাসন। বিশৃঙ্খলা এড়াতে জ়োন ভাগ করে করে ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা।
মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নান’ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে মহাকুম্ভের মেলাপ্রাঙ্গণে। রাত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাত ১২টা পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল, কিন্তু তার পর থেকে ভিড়ের ছবিটা ক্রমে বদলাতে শুরু করে। রাত ২টোয় পরিস্থিতি পুরো বদলে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকেই পুণ্যার্থীরা দলে দলে এগোতে শুরু করেন সঙ্গমের দিকে। প্রশাসন চেয়েছিল, পুণ্যার্থীরা আসুক, স্নান সেরে আবার ফিরে যাক। কিন্তু স্নানের পরেও বহু পুণ্যার্থী সঙ্গমস্থলের আশপাশেই ছিলেন। অনেকে আবার প্লাস্টিক পেতে মাটিতে শুয়েও ছিলেন।
আখড়াগুলির জন্য সঙ্গমের পথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। বুধবার সকাল ৫টা থেকে সেই পথ ধরেই আখড়ার সদস্যদের সঙ্গমে স্নান করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাত ১টার পর থেকেই সেই পথও পুণ্যার্থীদের ভিড়ে অবরুদ্ধ হয়ে যায় বলে পুণ্যার্থীদের দাবি। প্রশাসনের পরিকল্পনা ছিল, চিহ্নিত ব্যারিকেড ঘেরা পথ দিয়েই পুণ্যার্থীদের ফেরানো হবে। কিন্তু ভিড় এতটাই বেড়ে যায় রাত পৌনে ১টা থেকে রাত ২টোর মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রাত ২টোর পর থেকে বহু পুণ্যার্থী ব্যারিকেড টপকে, ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন। তাতেই বিপত্তি। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খান নিরাপত্তাকর্মীরা। অনেকেই ব্যারিকেড টপকে গিয়ে ঘুমন্ত পুণ্যার্থীদের গায়ে গিয়ে পড়েন। তার পরই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
পদপিষ্টের ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি করা হয় মেলাপ্রাঙ্গণে। মাইকিং করে সঙ্গমের এলাকা থেকে পুণ্যার্থীদের দূরে সরানোর কাজ করছে প্রশাসন। মহাকুম্ভের ডিজি বৈভব কৃষ্ণ জানান, ঘোড়সওয়ার পুলিশ দিয়ে সঙ্গম এলাকায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ভেঙে পড়া ব্যারিকেড আবার বাঁধা হয়েছে। সেখানেই নিরাপত্তারক্ষী টহল দিচ্ছে মেলাপ্রাঙ্গণের বিভিন্ন দিকে।