—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মাঝে কয়েক দিনে আপাত শান্তি এবং স্থিতাবস্থার পর আবারও অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর। সে রাজ্যের বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর জেলার সীমানা এলাকার কুমবি বিধানসভা কেন্দ্রে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবারের এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ চার জন।
ওই চার জন কাছের জঙ্গলে কাঠ কাটতে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত ওই চার জনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অনেকের আশঙ্কা দু’পক্ষের গোলাগুলির মাঝে পড়ে গিয়েছিলেন ওই চার জন। পুলিশ চার জনকেই শনাক্ত করতে পেরেছে। তাঁরা হলেন দারা সিংহ, ইবোমচা সিংহ, রোমেন সিংহ এবং আনন্দ সিংহ।
প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে,এক দল দুষ্কৃতী বুধবার বিষ্ণুপুর জেলার হাওতাক গ্রামে হানা দেয়। গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ১০০ জন মহিলা এবং শিশু নিরাপত্তার কারণে গ্রাম ছাড়েন। ঘটনাস্থলে যান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যেরা। যদিও তার পরেও গোলাগুলি থামেনি।
ভারত সরকার মণিপুরের কুকি এবং জোমিদের জনজাতি মর্যাদা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রিপাবলিক পার্টি অব ইন্ডিয়ার জাতীয় সম্পাদক মহেশ্বর থৌনঞ্জাম চিন-কুকিদের দেশের জনজাতি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, তফসিলি জনজাতি (এসটি) তালিকায় অন্তর্ভুক্তি রাজ্যর সুপারিশক্রমে হয়। তাই কুকিদের তালিকায় রাখা-না রাখার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের মতামত চেয়েছে।
প্রসঙ্গত, আট মাস আগে ‘তফসিলি তকমা’ ঘিরে মতবিরোধের জেরেই মণিপুরে মেইতেই-কুকি সঙ্ঘাত ছড়িয়েছিল। যা থেকে রাজ্য জুড়ে হিংসার সূচনা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।