Haryana Crisis

‘বিধানসভার অধিবেশন ডেকে সাইনির গরিষ্ঠতার প্রমাণ নিন’, হরিয়ানার রাজ্যপালকে চিঠি চৌটালার

দু’মাস আগে পর্যন্ত বিজেপির জোটসঙ্গী চৌটালা বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন ডেকে মুখ্যমন্ত্রী সাইনির কাছে গরিষ্ঠতার প্রমাণ নিতে হবে রাজ্যপালকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ১৪:৪৯
বাঁ দিক থেকে, সাইনি এবং দুষ্মন্ত।

বাঁ দিক থেকে, সাইনি এবং দুষ্মন্ত। — ফাইল চিত্র।

হরিয়ানার রাজ্যপাল বন্দারু দত্তাত্রেয়কে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিংহ সাইনির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ চাইলেন জননায়েক জনতা পার্টি (জেজেপি)-র প্রধান দুষ্মন্ত চৌটালা। দু’মাস আগে পর্যন্ত বিজেপির জোটসঙ্গী চৌটালা বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন ডেকে মুখ্যমন্ত্রী সাইনির কাছে গরিষ্ঠতার প্রমাণ নিতে হবে রাজ্যপালকে।

Advertisement

প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী চৌটালা চিঠিতে রাজ্যপালকে লিখেছেন, ‘‘আমি আপনাকে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ফ্লোর টেস্ট করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’’ আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফায় সে রাজ্যের ১০টি লোকসভা কেন্দ্রের সবক’টিতে ভোটগ্রহণ। তার আগেই হরিয়ানায় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। তিন নির্দল বিধায়ক বিজেপি সরকারের থেকে মঙ্গলবার রাতে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। যার জেরে সাইনির সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

যদিও মুখ্যমন্ত্রী সাইনি জানিয়েছেন, তাঁর সরকারের কোনও সঙ্কট নেই। তবে বিজেপি সরকারের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বলে জানিয়ে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছেন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। প্রসঙ্গত, শুধু সমর্থন প্রত্যাহারই নয়, তিন নির্দল বিধায়ক— রণধীর গোলান (পান্ডুরি), ধর্মপাল গোন্ডার (নিলোখেরি) এবং সোমবীর সিংহ সঙ্গওয়ান (দাদরি) প্রকাশ্যে কংগ্রেসকে সমর্থনের ঘোষণাও করেছেন।

গত ১০ বছর ধরে হরিয়ানায় বিজেপি ক্ষমতাসীন। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা আঁচ করে মনোহরলাল খট্টরকে সরিয়ে গত মার্চে সাইনিকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সে সময়েই লোকসভার আসন বণ্টন নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে হরিয়ানায় এনডিএ সরকার ছেড়ে বেরিয়ে যায় দুষ্মন্ত চৌটালার জননায়েক জনতা পার্টি (জেজেপি)। এর পর থেকেই নির্দল বিধায়কদের ভরসায় সরকার বাঁচিয়ে রেখেছেন সাইনি।

হরিয়ানা বিধানসভার সদস্য সংখ্যা হল ৯০। দু’টি পদ খালি থাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ম্যাজিক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫। স্পিকার-সহ বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৪০। পাশে চার নির্দল বিধায়ক। ফলে ম্যাজিক সংখ্যা থেকে এক জন বিধায়ক কম রয়েছে। বিরোধী শিবিরে কংগ্রেসের ৩০, জেজেপির ১০ এবং আইএনএলডির ১ জন বিধায়কের পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন তিন নির্দল।

একদা বিজেপির সহযোগী জেজেপি জানিয়েছে, বিধানসভা শক্তি পরীক্ষা হলে তারা সাইনি সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেবে। সাইনিকে হরিয়ানার ইতিহাসে দুর্বলতম মুখ্যমন্ত্রী বলেও আক্রমণ শানিয়েছেন জেজেপি প্রধান তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত। যদিও মুখ্যমন্ত্রী সাইনির দাবি, ‘‘সরকার পড়ে যাওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। অন্য নির্দল বিধায়কদের সমর্থন পাশে রয়েছে।’’

একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা হলে জেজেপির ১০ বিধায়কের মধ্যে অন্তত চার জন বিজেপির পাশে থাকবেন। জেজেপি বিধায়ক রামনিবাস সূর্যখেড়া এবং যোগিরাম শিহগ ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে হরিয়ানা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হুডা এখনও সাইনি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দেননি।

আগামী অক্টোবরে হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস মনে করছে, আর পাঁচ-ছ’মাসের জন্য ওই সরকার ফেলে আখেরে লাভ হবে না। বরং সেখানে লোকসভায় কংগ্রেস ভাল ফল করলে বিধানসভায় বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যাবে। তা ছাড়া, বিধানসভা নির্বাচন হতে যে হেতু ছ’মাসের কম সময় বাকি, তাই নতুন করে সরকার গড়ার সুযোগ কংগ্রেস পক্ষে পাওয়া সম্ভব নয়। উল্টে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আর সে ক্ষেত্রে পদ্ম-শিবির সহানুভূতির ভোট পেতে পারে বলে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশঙ্কা।

আরও পড়ুন
Advertisement