গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, ‘নিরামিষ আয়ুর্বেদিক উপাদানে তৈরি’। কিন্তু যোগগুরু রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলির ‘আয়ুর্বেদিক দিব্য মঞ্জন’ (দাঁতের মাজন)-এ সামুদ্রিক প্রাণীর দেহাংশের নির্যাস মেশানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিল্লি হাই কোর্টে বিষয়টি নিয়ে মামলা দায়ের হওয়ার পরেই জবাব তলব করে নোটিস পাঠানো হয়েছে পতঞ্জলিকে। এ বিষয়ে নোটিস পাঠিয়ে কেন্দ্রেরও অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে।
অভিযোগ, পতঞ্জলির দিব্য মঞ্জনে ‘সমুদ্রফেন’ নামে একটি উপাদান রয়েছে। তা আদতে সামুদ্রিক প্রাণী ‘সেপিয়া অফিসিনালিস’ (কমন কাটলফিস)-এর দেহাংশের নির্যাস! ওষুধ এবং প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনে ভুল তথ্যের ব্যবহার রুখতে দেশে চালু আছে ‘ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিক রুল, ১৯৪৫’। ওই আইনের ১৭০ নম্বর বিধিতে বলা আছে আয়ুর্বেদিক, সিদ্ধা এবং ইউনানি ওষুধের বিজ্ঞাপনে কোনও রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো চলবে না। যদি তা করা হয়, তবে সেটি হবে আইনের চোখে অপরাধ। দিব্য মঞ্জনের প্যাকেটে রয়েছে ‘সবুজ বিন্দু’র উপস্থিতি। অর্থাৎ, সেটি নিরামিষ এবং ভেষজ পণ্য বলে ঘোষণা করছে উৎপাদনকারী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে, মাজনে যদি মৎস্য-দেহাংশ মেলে, স্পষ্টতই আইনের চোখে তা ‘অপরাধ’ বলে গণ্য হবে।
প্রসঙ্গত, প্রায় দু’দশক আগে সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট প্রথম পতঞ্জলির ‘নিরামিষ পণ্যে’ পশুর দেহাংশের নির্যাস মেশানোর অভিযোগ তুলেছিলেন। সে সময় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে চলতি বছরে কড়া পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার জেরে উত্তরাখণ্ড সরকারের লাইসেন্সিং বিভাগ ‘শ্বাসরি বটি’, ‘ব্রঙ্কোম’, ‘শক্তিবর্ধক’, ‘মুক্তবতী এক্সট্রা পাওয়ার’, ‘মধু গ্রিট’-সহ পতঞ্জলির ১৪টি পণ্য উৎপাদন বন্ধের নির্দেশও দেয়। করোনা নিরাময়ের ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও ‘করোনিল কিট’-এর বিজ্ঞাপনে মিথ্যা প্রচারের জন্য রামদেবের সংস্থাকে ভর্ৎসনাও করে শীর্ষ আদালত।