ভূপেশ বঘেল। — ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের বিরুদ্ধে এফআইআর করল ইকনমিক অফেন্সেস উইং (ইওডব্লিউ)। মহাদেব অনলাইন বেটিং অ্যাপ দু্র্নীতি নিয়ে তদন্তে নেমেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই তদন্তের যে রিপোর্ট তারা জমা করেছে, তার ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের হয়েছে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই বেটিং অ্যাপ দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। তাদের দাবি, এই অ্যাপের মাধ্যমে টাকা নয়ছয় হয়েছে। প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা। তদন্তকারী আধিকারিকদের আরও দাবি, এই দুর্নীতির নেপথ্যে রয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
ইওডব্লিউয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই মামলার তদন্ত করছে ইডি। রাজ্যের ইকনমিক অফেন্সেস উইংয়ে যে রিপোর্ট তারা জমা করেছে, তার ভিত্তিতেই ভূপেশ বঘেল এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে গত ৪ মার্চ ইওডব্লিউ থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।’’ ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, কংগ্রেস নেতা বঘেল ছাড়াও অ্যাপের প্রমোটার রবি উপ্পল, সৌরভ চন্দ্রকার, শুভম সোনি, অনিল কুমার আগরওয়াল এবং আরও ১৪ জনের নাম রয়েছে। এফআইআরে কয়েক জন আমলা, পুলিশ আধিকারিকেরও নাম রয়েছে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৪২০ (প্রতারণা), ৪৭১ (ভুয়ো নথিকে আসল হিসাবে ব্যবহার) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইডির রিপোর্টে বলা হয়েছ, মহাদেব বুক অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে বেটিং করা যেত। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টেলিগ্রামের মাধ্যমে এতে অংশ নেওয়া যেত। সে কারণেই অ্যাপটি তৈরি করিয়েছিলেন উপ্পল, চন্দ্রকার, সোনি, আগরওয়াল। এরা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বেআইনি আয় নিজেদের কাছে রাখতেন। বাকিটা প্যানেল বা ব্রাঞ্চ অপারেটরদের মধ্যে বিলি করে দিতেন। এফআইআরে দাবি, ২০২০ সালে অতিমারির কারণে লকডাউন জারির পর মাসে ৪৫০ কোটি টাকা করে রোজগার করতেন প্রোমোটার এবং অপারেটরেরা। এই টাকা লেনদেনের জন্য ভুয়ো নথি দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। অ্যাপের বিজ্ঞাপনেও বহু টাকা খরচ করা হয়।
গত বছর ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে নেমে বঘেলকে এই অ্যাপ দুর্নীতিকাণ্ডে কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে বিজেপি নেতারা। বঘেল যদিও পাল্টা ইডির পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ন’জনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। রাইপুর আদালতে দু’টি চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে।