রবনীত সিংহ বিট্টু। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
কৃষক আন্দোলনে শামিল হওয়া কংগ্রেস সাংসদ রবনীত সিংহ বিট্টুর উপর হামলার অভিযোগ। পাগড়ি খুলে নিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীরা তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছিল বলেও দাবি করেছেন ওই নেতা। তাঁর গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীতে ট্র্যাক্টর নিয়ে মিছিল করার কথা কৃষকদের। তার জন্য রবিবারই তাঁরা ছাড়পত্র পেয়েছেন। তবে রাজধানীতে প্রবেশ করলেও প্রজানতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে কোনও সমস্যা করবেন না বলেই জানিয়েছেন কৃষক নেতারা। তার আগে দিল্লি সীমানায় এই মুহূর্তে পরিস্থিতি থমথমে। সেই অবস্থাতেই রবিবার সিংঘু সীমানায় গুরু তেগবাহাদুরজি মেমোরিয়ালে ‘জন সংসদ’ সভায় যোগ দিতে যান লুধিয়ানার সাংসদ রবনীত। সেখানেই তাঁর উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ।
নিজের ফেসবুক পোস্টে রবনীত জানিয়েছেন, অমৃতসরের কংগ্রেস সাংসদ গুরজিত সিংহ আউজলা এবং দলের বিধায়ক কুলবীর সিংহ জিরার সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে তাঁর উপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। প্রথমে টেনে তাঁর পাগড়ি খুলে নেওয়া হয়। তার পর বেধড়ক মারধর শুরু হয়।
সেই সময় দলের লোকজন রবনীতকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, যাতে বেরিয়ে যেতে পারেন তিনি। কিন্তু তিনি গাড়িতে উঠলে লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর এসইউভি-র উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। সামনে-পিছনে গাড়ির সব কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। রবনীতের উপর পরিকল্পনামাফিক হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন গুরজিত এবং কুলবীরও। তবে কে বা কারা হামলা চালিয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রবনীত পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহের পৌত্র। ১৯৯৫ সালে খুন হন বিয়ন্ত। বেশ কিছু দিন ধরে দিল্লির যন্তরমন্তরে কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেছিলেন রবনীত, গুরজিত এবং কুলবীর। তাঁকে খুন করার জন্যই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন রবনীত।
এর আগে, সিংঘু সীমানায় সম্প্রতি বন্দুক নিয়ে চড়াও হন এক মুখোশধারী ব্যক্তি। সেই থেকে তটস্থ হয়ে রয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। মঙ্গলবার সেখান থেকেই হাজার হাজার কৃষক রাজধানীতে ট্র্যাক্টর মিছিলে যোগ দেবেন। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানা অঞ্চল গাজিপুর থেকেও কৃষকদের রওনা দেওয়ার কথা। তা রুখতে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রথমে কৃষকদের পেট্রল-ডিজেল জোগানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কৃষকদের ঘরবন্দি করে রাখার অভিযোগও ওঠে। তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে, শেষমেশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজিপুর পুলিশ।
এরই মধ্যে, পাকিস্তানের মাটিতে বসে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, এ বার এমনটাই দাবি দিল্লি পুলিশের। এ নিয়ে কৃষক সংগঠনগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে বলে রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ দেশের রাজধানীর পুলিশ।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে দিল্লি পুলিশ গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, পাকিস্তানের মাটি থেকে অন্তত ৩০৮টি টুইটার হ্যান্ডেল চালানো হচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য, ওই টুইটার হ্যান্ডেলের মাধ্যমে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বিশৃঙ্খলা তৈরির ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে।