সিঙ্ঘু সীমানায় কৃষকদের উল্লাস। ছবি সৌজন্য টুইটার।
দিল্লিতে ঠান্ডাটা সবে জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেছে। সেই তাপমাত্রা যেন এক ধাক্কায় বাড়িয়ে দিল শুক্রবারের এক ঘোষণা। না, এ ঘোষণা রাজধানীর মৌসম ভবনের নয়। সকাল ৯টা। দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ভাষণ শুরু হতে আচমকাই বদলে গেল রাজধানীর রং। উত্তাপ বাড়তে শুরু করে দিল্লির।
কেন?
ছবিটা ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ধরা দিয়েছে সিঙ্ঘু এবং গাজিপুর সীমানায়। যে সীমানা দীর্ঘ এক বছর ধরে হয়ে উঠেছে কৃষক আন্দোলনের দুর্গ। শুক্রবার সেই দুই সীমানায় কৃষক দুর্গ যেন এক লহমায় উচ্ছ্বাসের বানে ভেসে গিয়েছে। জয়োল্লাসের ছবি সীমানার কানায় কানায়। গুরু নানক জয়ন্তীতে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে কেন্দ্র। এই ঘোষণার পর পরই দৃশ্যটা বদলে যেতে শুরু করল সিঙ্ঘু এবং গাজিপুর সীমানায়।
অন্য দিনের মতো শুক্রবারও এই দুই আন্দোলনস্থলে ভোর থেকে ছবিটা স্বাভাবিকই ছিল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে কৃষকরা। শীতের রাজধানীতে সবে উষ্ণতার ছোঁয়া নিচ্ছিলেন কৃষকরা। সিঙ্ঘু সীমানায় কয়েক বর্গ কিলোমিটার জুড়ে আন্দোলনকারী কৃষকদের সার দিয়ে তাঁবু ফেলা। আগের মতো বিপুল সংখ্যায় কৃষক না থাকলেও আন্দোলনস্থলের চেহারা বদলায়নি। প্রতি দিনই সকাল ১০টা থেকে ধরনা মঞ্চে হাজির হন কৃষকরা। কিন্তু শুক্রবার যেন আচমকাই ছবিটা বদলে যেতে শুরু করে। বিপুল সংখ্যায় কৃষক জড়ো হন সিঙ্ঘু সীমানায়। কৃষি আইন প্রত্যাহারের খবর শুনতেই উল্লাসে মাতেন তাঁরা। মিষ্টি, জিলিপি বিলি করা হয়। আনন্দে পরস্পরকে আলিঙ্গন করা এমনই ছবি ধরা পড়েছে সেখানে।
কৃষকদের কাছে এ এক বিশাল জয়। দীর্ঘ এক বছর আন্দোলনের জয়। আর সেই জয়ের আস্বাদ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে দেখা গেল কৃষকদের। দুই সীমানায় ফিরে এল উচ্ছ্বাসের ছবি। আর সেই জোয়ারে গা ভাসালেন দেশের অন্য প্রান্তের কৃষকরাও। ২০২০-র ২৫ নভেম্বর রাজধানীতে আন্দোলনে বসেথিলেন কৃষকরা। পঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে প্রচুর সংখ্যায় কৃষক হাজির হয়ে সেই আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে তোলেন। দীর্ঘ সেই আন্দোলনের ফসল তুলতে পেরে খুশি আন্দোলনকারীরা। গাজিপুর সীমানাতেও একই ছবি ধরা পড়েছে। কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা শোনার পর কৃষকরা স্লোগান তোলেন, ‘কিসান জিন্দাবাদ।’